মোহনবাগান বনাম ইস্টবেঙ্গল! বাঙাল বনাম ঘটি! কি ঘটলো এবার নতুন!
মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের লড়াই আজ শুরু না, এটি প্রায় একশো বছরের পুরোনো। মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের এই লড়াইকে এশিয়ার সবথেকে বড়ো ফুটবলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা হিসেবে ধরা হয়। বিশ্বের তাবড় তাবড় ফুটবল দলের মাঝে নামের ছাপ রাখা এত সহজ ছিল না। এটা শুধুমাত্র দুই দলের ফুটবলের লড়াই না, দুই জাতির আবেগ মিশে রয়েছে এই দুটি দলের নামের মধ্যে।
এদেশে আসা বঙ্গভঙ্গের সময় বাংলাদেশের উদ্বাস্তু মানুষের খালি পায়ের জয়যাত্রার আতুর ঘর হল এই ইস্টবেঙ্গল। অন্যদিকে পরাধীন দেশের স্বাধীনতার লড়াইতে মোহনবাগান পায়ে পায়ে পথ দেখিয়েছে। দুই দলের অন্তর্বর্তী লড়াই মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না হলেও এই লড়াই সুস্থ লড়াই।
https://encrypted-tbn0.gstatic.com/images?q=tbn:ANd9GcQEns8p5ZtQGyRog3odGBeMm-MMfXSKpILSTg&usqp=CAU
মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলের ম্যাচকে “বড়ো ম্যাচ” বা “ডার্বি” বলা হয়। প্রথম ডার্বি ছিল ১৯২১ এর ৮ই আগস্ট, “কোচবিহার কাপ”। সম্প্রতি এই বছরের ২৭শে নভেম্বর দুই দলের ম্যাচ ছিল। ডার্বি মানেই সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনার পারদ থাকে তুঙ্গে। কিন্তু চমক ছিল এবারের ডার্বিতে, কি সেটা? করোনা আবহে ম্যাচ, সেটাই কি চমক? নতুন খেলোয়াড় নাকি কোচ বদল? তবে কি মালিক বদল? খানিকটা তাই। আই.এস.এল (ISL- Indian Super League) শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা সেখানে খেলতে দেখেছি ১০টা দলকে।
সারা ভারতের এই ১০ দলের মধ্যে ছিল কোলকাতাও – “এ.টি.কে. (ATK- Atlético de Kolkata )” যা এই বছরই মোহনবাগানের সাথে যৌথ হয়ে “এ.টি.কে. মোহনবাগান” নামে মাঠে নামে। অন্যদিকে “ইস্টবেঙ্গল”কেও আই.এস.এলে নিয়ে আসেন নীতা আম্বানি। মোট ১১টি দলের এই লিগে এবারে মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলকে মুখোমুখি হতে দেখা গেছে মাত্র একবারই। তিলক ময়দানের ডার্বির ফলাফলে অবশ্য ঘটিবাহিনীর মাথাতেই মুকুট ওঠে, এ.টি.কে. মোহনবাগান ২ – ইস্টবেঙ্গল ০
ফলাফল যাই হোক না কেন দুই শিবিরেই প্রস্তুতির পারদ ছিল তুঙ্গে। ইস্টবেঙ্গল কোচ রবি ফাওলার অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিয়েছিলেন যেমন: “হাই-পড” ক্যামেরা, পারফরম্যান্স বিশ্লেষণ প্রভৃতি। এ.টি.কে. মোহনবাগান কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস অন্যদিকে দলের মানসিক দৃঢ়তা বাড়ানোর কাজে বেশি নজর দিয়েছিলেন।
বিদেশি তারকাদের মধ্যেও এই ডার্বির উত্তেজনা চরমে। এবারের আই.এস.এলে শেষ হাসি হাসল এ.টি.কে. মোহনবাগান লিগ জয়ের হাসি হেসে। হার – জিত যাই হোক, নতুনত্ব যাই আসুক চিরন্তন হল মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের “ডার্বির” উত্তেজনা।
বাঙাল – ঘটির লড়াই মাঠের মধ্যেই শুধুমাত্র সীমাবদ্ধ না হলেও তা হাতাহাতি বা মারপিটের সীমানা পর্যন্ত গড়ায় নি। ইলিশ – চিংড়ির তরজা যেমন নতুন নয় তেমন নতুন নয় ডার্বি নিয়ে রেষারেষিও। নতুন শুধু দুই দলের ম্যাচ জেতা আর হারার সংখ্যা।
জিতেছে | |
ইস্টবেঙ্গল | ১২৯ |
মোহনবাগান | ১২১ |
ড্র হয়েছে ১২২ টা ম্যাচ
নতুন এই গ্রাফ আরও আকর্ষণীয় হয়ে উঠুক আগামী দিনেও। ম্যাচ জেতা হারার সংখ্যার পরিবর্তন যতই হোক, নতুন নতুন ট্রফি যে দলের ঘরেই উঠুক আসলে সবটাই বাঙালীর। আর সেই আবেগ হল সর্বোপরি। মোহনবাগান ও ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলের ম্যাচ, বাঙাল – ঘটির ইলিশ – চিংড়ির স্বাদের তফাৎ সবটাই মুখোশ। মুখোশের পিছনে আছে পরস্পরের পরস্পরের প্রতি সহানুভূতি। যার প্রমাণ মাঠই আমাদের দিয়েছে বারবার।
এরকম আরও খবরের জন্য পরতে থাকুন বাংলা খবর-
https://banglakhabor.in/wp-content/uploads/2020/12/PhotoGrid_1606891497091-scaled.jpg