নিজস্ব সংবাদদাতা- ১৯৬৯ সালের ১ আগস্ট যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে পশ্চিমবঙ্গের বিধান পরিষদ অবলুপ্ত করা হয়। সে সময় বামপন্থী দলগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল রাজ্য বিধানসভা দ্বিকক্ষ রাখার কোনো মানে হয় না। এতে কেবলমাত্র সরকারি অর্থের অপচয় ঘটে। যদিও বিহার, মহারাষ্ট্র, কর্নাটক, উত্তরপ্রদেশের মতো বেশকিছু রাজ্যে এখনও বিধান পরিষদ চালু আছে।২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল সরকার গঠন করার পর সিদ্ধান্ত নেয় বিধান পরিষদ আবার ফিরিয়ে আনা হবে। যদিও গত দশ বছরে পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিয়ে খুব একটা নাড়াচাড়া করা হয়নি। কিন্তু আজ তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন তারা তৃতীয় বারের জন্য সরকার গঠন করলে অবশ্যই বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনবেন।
২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচন উপলক্ষে তৃণমূল রাজ্যের ২৯১ টি কেন্দ্রে তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে আজ। তাতে দেখা যায় দলের ২৭ জন বিধায়ক সহ বেশ কয়েকজন বর্ষীয়ান নেতা টিকিট পাননি। এই বিষয়ে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “অমিত মিত্র, পূর্ণেন্দু বসুর মতো যারা যোগ্য অথচ বয়সের কারণে ও কিছু সাংগঠনিক কারণে টিকিট পাননি তাদের বিধান পরিষদ তৈরি করে জিতিয়ে আনা হবে।”
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি বলছে দলের টিকেট প্রত্যাশীদের ক্ষোভ প্রশমনে করার জন্যই তৃণমূল নেত্রী বিধান পরিষদের প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন। রাজনৈতিক মহলের একাংশের অভিমত দলের মধ্যে ক্ষোভ ধামাচাপা দিতেই সম্ভবত বিধান পরিষদের প্রস্তাব সামনে নিয়ে এসেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একুশের নির্বাচনের পর তৃণমূল যদি আবার পশ্চিমবঙ্গের সরকার গঠন করতে পারে সে ক্ষেত্রে তিনি নিশ্চয়ই বিধান পরিষদ তৈরি করবেন। না হলে দলের ভাঙ্গন আটকানো তার পক্ষে মুশকিল হয়ে যাবে। এর পাশাপাশি যোগ্য অথচ বিধানসভার সদস্য নয় এমন ব্যক্তিদেরকে মন্ত্রিসভায় আনতে হলে বিধান পরিষদ একটি আদর্শ জায়গা হবে।
যদিও রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আজকের ঘোষণাকে কটাক্ষ করে বলছেন তৃণমূল নেত্রী দলের বয়স্কদের জন্য ‘বৃদ্ধাশ্রম’ তৈরীর উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গে বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার পরিকল্পনা করছেন। যদিও বামপন্থী দলগুলোর পক্ষ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে।