নিজস্ব সংবাদদাতা- শান্তি মিছিল থেকেই আওয়াজ উঠল গুলি করে মারা হোক! ‘বাঙ্গাল কো গাদ্দারো মে গোলি মারো’, দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ অঞ্চলের এই শ্লোগানকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে। আজ তৃণমূল কংগ্রেসের শান্তি মিছিল ছিল টালিগঞ্জ ট্রাম ডিপো থেকে হাজরা মোড় পর্যন্ত। সেই শান্তি মিছিলে হিন্দি ভাষায় দেওয়া স্লোগানে যে দাবি উঠল তার বঙ্গানুবাদ হল, ‘বাংলার শত্রুদের গুলি করে মেরে ফেলা হোক’!

গতকাল শুভেন্দু অধিকারী ও দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে টালিগঞ্জ থেকে রাজবিহারী পর্যন্ত বিজেপির রোড শো হয়। সেই রোড শো-কে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে টালিগঞ্জের চারু মার্কেট ও মুদিয়ালি অঞ্চল। সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকরা। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় পাড়ায় ঢুকে আবালবৃদ্ধবনিতাকে মারধর করেছে বিজেপির কয়েক শো সমর্থক।

রাজ্যের ক্রীড়া, যুব কল্যাণ ও পূর্ত মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস আজ সকালে চারু মার্কেট ও মুদিয়ালির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করার পর ঘোষণা করেন এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে তারা শান্তি মিছিল করবেন। সেই ঘোষণা অনুযায়ী অরূপ বিশ্বাস ও বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আজ দুপুরের পর মিছিল করে তৃণমূল।

শান্তি মিছিলে উপস্থিত থাকা তৃণমূল কর্মী সমর্থকদের একাংশ হঠাৎই শ্লোগান দিতে শুরু করেন বাঙ্গাল কো গাদ্দারো মে গোলি মারো। এই স্লোগানের মূল লক্ষ্য যে শুভেন্দু অধিকারী তা আর বলে দিতে হয় না। কিন্তু বিভিন্ন বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে মিছিলের এই অংশটি সম্প্রচারিত হওয়ার পর বিরোধী প্রতিটি রাজনৈতিক দলই তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরব হয়ে ওঠে।


রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য দাবি করেন, “এটাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই।” সিপিআই(এম) পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তীর দাবি, “তৃণমূল ও বিজেপি একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। এর আগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর প্রকাশ্য মঞ্চে দাঁড়িয়ে গুলি করে মারার হুমকি দিয়েছিলেন। আজ তৃনমূলের কর্মী-সমর্থকরা গুলি চালানোর হুমকি দিচ্ছেন। এ থেকেই প্রমাণ হয় এরা দুজনেই এক।”

তৃণমূলের মুখপাত্র কুনাল ঘোষ সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে আজকের মিছিলের এই স্লোগানের নিন্দা করে বলেন, “দল এই ধরনের স্লোগানকে অনুমোদন করে না। এর নিন্দা করছি আমি।”