নিজস্ব সংবাদদাতা: গত শনিবার ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের মাঠে ভরা জনসভা থেকেই এই বিস্ফোরক অভিযোগটি করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেছিলেন, “ভোটের সময় বিজেপি ‘বহিরাগত’দের ঢুকিয়ে ঝামেলা করবে।” প্রথম দফার ভোটে কাঁথিতে এরকম বহিরাগতদের তৃণমূলের মা-বোনেরা ধরে ফেলেছেন বলেও জানিয়েছিলেন তিনি। তখনই বোঝা যাচ্ছিল, হাওড়ার ভোটে ‘বহিরাগত’ ইস্যুটি বড় হয়ে উঠতে চলেছে। বিশেষত, প্রাচীন শহর হাওড়ায় নানা ভাষাভাষী, প্রবাসী মানুষ রয়েছেন ব্যাপক সংখ্যায়। মূলত অবাঙালি অধ্যুষিত অঞ্চলে কে এখানকার ভোটার আর কে বহিরাগত, তা বোঝা বড়ই মুশকিল।
আর সেই সুযোগকে ব্যবহার করেই বিজেপি এবার ভোটের আগে বহিরাগত দুষ্কৃতীদের হাওড়ায় ঢোকাচ্ছে বলে এদিন কমিশনের কর্তাদের কাছে অভিযোগ করল রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল। যা রাজনৈতিকভাবে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতদিন দেখা গিয়েছে, সাধারণত শাসকদল দাবি করে, ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ হতে চলেছে। বিরোধীরা নানারকম অভিযোগ করে থাকে। এবার তৃণমূলই আগে থেকে এমন অভিযোগ সামনে আনায় তা রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট চাঞ্চল্যের কারণ হয়েছে।
উল্লেখ্য, আগামীকাল রাজ্যে দ্বিতীয় দফার ভোট। এরপর আগামী ৬ এবং ১০ এপ্রিল- তৃতীয় দফার নির্বাচন হবে রাজ্যে। এই দু’দিন ভোট হবে হাওড়া জেলাতেও। সেই জেলার ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ হবে। তার আগেই ‘বহিরাগত’ ইস্যুতে আজ কমিশনের কাছে অভিযোগে সরগরম হয়ে উঠেছে রাজনীতির ময়দান। এখন থেকেই বিজেপি হাওড়া স্টেশন এলাকার একাধিক হোটেলে ভিনরাজ্য থেকে ‘বহিরাগত’ দুষ্কৃতীদের এনে রেখেছে বলে কমিশনের কাছে অভিযোগ জানিয়েছে তৃণমূল।
শাসকদলের পাশাপাশি সিপিএম-ও একাধিক অভিযোগ জানিয়েছে কমিশনের কাছে। তার মধ্যে রয়েছে জেলায় স্পর্শকাতর বুথের সংখ্যা বাড়ানো, কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরপেক্ষতা সহ নানা দাবি। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশনের দুই শীর্ষকর্তা অজয় নায়েক এবং বিবেক দুবে হাওড়ায় আসেন। তাঁরা ভোট নিয়ে কখনও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, কখনও পুলিশ ও প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করেন। রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে কমিশনের এই দুই শীর্ষকর্তার বৈঠকে বিভিন্ন দলের নেতারা অভিযোগের কথা জানিয়েছেন।