নিজস্ব সংবাদদাতা: ২০১৯ লোকসভা ভোটের ফলাফল বেরোতেই দেখা যায়, তৃণমূলের অবস্থা ভীষণই ভয়ানক। মাত্র ২২টি আসন পেয়েছে রাজ্যের শাসকদল। এদিকে, বাম, কংগ্রেসকে টপকে ১৮টি সিট জিতে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। তারপরই শুরু হয় একের পর এক নেতামন্ত্রীর দলবদল। যার ফলে তড়িঘড়ি ড্যামেজ কন্ট্রোল করতে তৃণমূল কংগ্রেস নিয়ে আসে ভোটকুশলী প্ৰশান্ত কিশোরকে। সেই তখন থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজ করছেন পিকে।
প্রায় ২ বছর পর অবশেষে এই প্রথম, প্রকাশ্যে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে তাঁর রসায়ন নিয়ে মুখ খুললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন, ঠিক কী ভূমিকা প্রশান্ত কিশোরের, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগই বা কতটা। ভোটের লড়াইয়ে তাঁর কূটবুদ্ধির প্রয়োজন কেন পড়ল? সেই প্রশ্নের জবাবও সপাটে দিলেন তৃণমূলের যুবরাজ। বললেন, “২০১৪ লোকসভা নির্বাচনের আগে নরেন্দ্র মোদীও তো প্রশান্ত কিশোরকে কাজে লাগিয়েছিলেন। তাঁরা কাজে লাগাতে পারলে আমরা পারব না কোন যুক্তিতে।”
তৃণমূলের প্রধান সেনাপতি অভিষেক প্রশান্তের গুরুত্ব স্বীকার করেও স্পষ্ট করে দিলেন, উনি দলের ভিতরে নেই। দলের আউটসোর্সিং তত্ত্ব, যা এ নির্বাচন পর্যায়ে বারংবার উঠছে, তা সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে অভিষেকের বক্তব্য, “এটা সর্বৈব মিথ্যে। যাঁরা বহু পদ নিয়ে বসেছিলেন, জেলায় জেলায় ছড়ি ঘোরাচ্ছিলেন, তাদের মৌরসিপাট্টা শেষ করা হয়েছে বলে এইটা তাঁরা বলছে।” নাম না নিলেও পরিষ্কার অভিষেকের আঙুল সেই শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই। যাঁকে গত কয়েকমাসে ‘মীরজাফর’, ‘গদ্দার’ বলে একাধিকবার কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
অভিষেকের কথায়, “আগে অবজারভার মডেলে পার্টি চলত। নীচুতলার এখন মডেলটা বদলেছে। সম্ভাবনাময় যাঁরা, তাদের আমরা কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছি।” অভিষেকের ব্যখ্যায়, এই কারণেই দল থেকে চলে যাওয়া নেতাদের গাত্রদাহ। এদিকে অনেকেই বলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ প্রশান্ত কিশোরের। অভিষেক এই দাবিকেও উড়িয়ে দিয়েছেন এদিন।
অভিষেক জানান, দলে সাতজনের কমিটি রয়েছে। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌগত রায়, ফিরহাদ হাকিম, ডেরেক ও’ব্রায়েন, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো বরিষ্ঠ নেতারা রয়েছেন সেই কমিটিতে। ফলে কাজ হয় সকলের মতামতের ভিত্তিতে এবং সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে। কিন্তু প্রশান্ত কিশোর কেন বরিষ্ঠ নেতাদের মাথার ওপর থাকবেন, হোমটাস্ক দেবেন! অভিষেক ব্যাখ্যা দিলেন, প্রশান্ত নয়, দলের ছোটবড় নেতাদের কাজ দেওয়া হয় দল থেকেই, প্রশান্ত কিশোর দেন না। কে দলে কী কাজ করছে সেটা দল দেখে।