নিজস্ব সংবাদদাতা- শরদ পাওয়ারের উদ্যোগকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। মহারাষ্ট্রের এই প্রবীণ রাজনৈতিক নেতা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে বাম কংগ্রেসের মহাজোট গঠনের লক্ষ্যে ময়দানে নেমেছেন। এই নিয়ে তিনি নাকি সীতারাম ইয়েচুরির সঙ্গেও ইতিমধ্যে বৈঠক করেছেন বলে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়েছে। সেই বৈঠকে সিপিআই নেতা ডি রাজা-ও উপস্থিত ছিলেন। যদিও আলোচনা বিশেষ ফলপ্রসূ হয়নি বলেই খবর।
‘মারাঠা স্ট্রং ম্যান‘ নামে পরিচিত শরদ পাওয়ারের যুক্তি একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে যদি ত্রিমুখী লড়াই হয় সেক্ষেত্রে বিজেপির ক্ষমতা দখলের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যাবে। এর পাশাপাশি তিনি ইয়েচুরিকে জানান পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মুখ হিসাবে আর কেউ নেই। এই পরিস্থিতিতে বাম-কংগ্রেস জোটের উচিত তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে জোট করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা।
রাজ্যের রাজনৈতিক মহলের মতে শরদ পাওয়ারের এই প্রস্তাবকে নাকচ করে দেওয়া ছাড়া সীতারাম ইয়েচুরির আর কোনো উপায় ছিল না। কারণ তৃণমূলের সঙ্গে হাত মেলালে তাদের শেষ ভোট ব্যাঙ্ক টুকুও যে বেরিয়ে যাবে সেটা ভালোই জানেন সিপিআই(এম) নেতৃত্ব। তাছাড়া আলিমুদ্দিন স্ট্রিট কোনো মতেই কালীঘাটের সঙ্গে জোট বাঁধতে রাজি নয়। এক্ষেত্রে দিল্লি থেকে যদি রাজ্য সিপিআই(এম)-র ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে দল ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা পর্যন্ত আছে!
অন্যদিকে কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান, অধীর চৌধুরীরাও কোনমতেই তৃণমূল নেত্রীর হাত ধরতে রাজি নন। তারা বামেদের সঙ্গেই জোট গড়ে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার বিষয়ে মনস্থির করেছেন। কংগ্রেস হাইকমান্ডও বামেদের সঙ্গে জোট গড়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার বিষয়টিতেই সীলমোহর দিয়েছে।
বিজেপি অবশ্য এই কথা শুনে তৃণমূলের পাশাপাশি সিপিআই(এম) এবং কংগ্রেসকেও কটাক্ষ করেছে। এই তিন দল মিলে জোট গঠন করেও তাদের হারাতে পারবে না বলে দাবি বিজেপির। একুশের নির্বাচনের পর রাজভবনে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রীই শপথ নেবে বলে তাদের দাবি।
এই প্রস্তাবের কথা জানাজানি হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাম সমর্থকরা ইতিমধ্যেই সরব হয়ে উঠেছেন। তাদের বেশিরভাগেরই বক্তব্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে জোট গঠন করা হলে তারা সেই প্রস্তাব মানবে না!