হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসাবে মানুষজন যে টেলিগ্রামকে হাতিয়ার করে তুলতে চলেছে তা সাম্প্রতিক সময়ে একটি তথ্য থেকেই পরিষ্কার হয়ে গেল। জানা গিয়েছে মাত্র তিন দিনের মধ্যে নতুন করে আড়াই কোটি মানুষ টেলিগ্রাম ব্যবহার করতে শুরু করেছেন। এই সংস্থার দাবি এই নতুন আড়াই কোটি ইউজারের প্রত্যেকেই এর আগে হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করতেন। তারা ওই মেসেজিং অ্যাপের নতুন প্রাইভেসি পলিসিতে সম্মত না হওয়ার কারণেই মেসেজিং অ্যাপ হিসাবে টেলিগ্রাম ব্যবহার করতে শুরু করেছেন।
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালে রাশিয়ান ভাই পাভেল দুরভ এবং নিকোলাই দুরভ টেলিগ্রাম তৈরি করেন। এই সংস্থাটি প্রথম থেকেই গ্রাহকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংক্রান্ত নিরাপত্তা বিধি কঠোরভাবে মেনে চলছে। এইজন্য তারা একাধিক লোভনীয় বাণিজ্যিক প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন। কারণ এই প্রস্তাবগুলিতে সম্মত হলে গ্রাহক নিরাপত্তার জন্য যে এনক্রিপশন পলিসি আছে তার সঙ্গে সংস্থাকে আপস করতে হত।
ঘটনা হল হোয়াটসঅ্যাপের নিয়ন্ত্রণ বর্তমানে মার্ক জুকারবার্গের সংস্থা ফেসবুকের হাতে আছে। কয়েক সপ্তাহ আগেই হোয়াটসঅ্যাপের গ্রাহকরা একটি নতুন নোটিফিকেশন দেখতে পান- যেখানে বলা হয়েছে তাদের তথ্য ফেসবুকের সঙ্গে শেয়ার করা হবে। এও জানানো হয়েছে আগামী ৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে যারা এই বিষয়ে সম্মতি প্রদান করবেন না তাদের হোয়াটসঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। অনেক ব্যবহারকারী আশঙ্কা প্রকাশ করতে শুরু করেন এই বিষয়ে সম্মতি প্রদান করলে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে তারা যে সমস্ত ব্যক্তিগত বার্তা পাঠান তার সবই ফেসবুকে দেখা যেতে পারে বা ব্যবহারকারীদের পাঠানো যাবতীয় বার্তা সংস্থাগুলি সবই জেনে যেতে পারে! এই আশঙ্কা থেকেই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রাহকদের একটা বড় অংশ এই বিষয়ে সম্মতি প্রদান করেননি।
যদিও গতকাল ফেসবুক এবং হোয়াটসঅ্যাপের পক্ষ থেকে যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে ব্যবহারকারীর কোনো ব্যক্তিগত বার্তা ফেসবুকের হাতে তুলে দেওয়া হবেনা, হোয়াটসঅ্যাপ আগের মতোই নিরাপদ ও সুরক্ষিত থাকবে। তবে এই ঘোষণার পরও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের টেলিগ্রামে যোগ দেওয়ার হিড়িক যে খুব একটা কমেনি তা ওপরের তথ্যটি থেকেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে।