নিজস্ব সংবাদদাতা: আগামীকাল থেকে দেশজুড়ে শুরু হচ্ছে ১৮ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদের জন্য টিকাকরণ শুরু হচ্ছে ১ মে থেকে। এতদিন কেন্দ্রের তরফে টিকা গিয়েছে প্রতিটি রাজ্যে। তবে এবার সরাসরি কোম্পানিগুলির থেকেই প্রতিষেধক কিনতে পারবে রাজ্যগুলি এবং সেটা পাওয়া যাবে বেসরকারি হাসপাতাল বা বেসরকারি টিকাকরণের কেন্দ্র থেকে। ভারতে এই মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে দু’টো প্রতিষেধক- কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন। তবে কোন ভ্যাকসিনটা নেওয়া উচিত, কোনটার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি, এ নিয়ে ফের শুরু হয়েছে তর্ক-বিতর্ক।
অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভারতীয় সংস্করণ কোভিশিল্ড। যা তৈরি হচ্ছে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউটে। এটি ভাইরাল ভেক্টর বা ‘ডামি ভ্যাকসিন’। মানে মানুষের শরীরের ভাইরাস নয়, তৈরি হচ্ছে শিম্পাঞ্জির শরীর থেকে নেওয়া এক ধরনের ভাইরাসের প্রোটিন স্পাইক থেকে। যেটা ধরে নেওয়া হচ্ছে করোনা ভাইরাসের মতো। তাই সেটা শরীরে গেলে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে এবং আসল ভাইরাস আক্রমণ করলে আপনার শরীর সেটার সঙ্গে ল়ড়াই করতে পারবে। অন্য দিকে, ভারত বায়োটেকের কোভ্যাক্সিন তৈরি হচ্ছে মৃত ভাইরাসের স্ট্রেন থেকে। যেহেতু এই ভাইরাস মানুষের শরীরে কী ভাবে প্রভাব ফেলে সেটা জানা হয়ে গিয়েছে, তাই রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাও সেই অনুযায়ী তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
কোভ্যাক্সিনের পরীক্ষা শেষ হয়েছিল এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে। পরীক্ষা করা হয়েছিল ভারতীয়দের উপরেই। তাই এ দেশের মানুষের ওপর ভাইরাস কী ভাবে প্রভাব ফেলছে, সেটা মেপে সেই অনুযায়ী তৈরি এই প্রতিষেধক। তবে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্তও ভাইরাসের নতুন রূপগুলো সে ভাবে এই দেশে ধরা পড়েনি এবং যাদের উপরে পরীক্ষা করা হয়েছিল, তাদের কোনও কো-মর্বিডিটি ছিল না। কোভিশিল্ড সেই তুলনায় অনেক বেশি মানুষের উপর পরীক্ষা করা হয়েছিল, যাঁদের নানা রকম শারীরিক সমস্যা ছিল। তবে পরীক্ষা হয়েছে ব্রাজিল, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আমেরিকার মানুষের উপরে। যদি ভাবেন, সেটা সুখবর, কারণ এই দেশগুলিতে করোনা ভাইরাসের নানা রকম রূপের কথা জানা গিয়েছে, তা হলে ভুল ভাবছেন। কোভিশিল্ডের গবেষণা শেষ হয়ে গিয়েছিল গত নভেম্বরেই। সেই সময়েও এ দেশের রূপ পরিবর্তিত ভাইরাসের নতুন স্ট্রেনের খোঁজ পাওয়া যায়নি সে ভাবে।
দুই প্রতিষেধই সমান পদ্ধতিতে দেওয়া হয়। প্রথম পর্বের টিকাকরণের পরে বিরতি রেখে দ্বিতীয় পর্ব। কোভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে সেটা ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পরে। কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে সেটা ৬-৮ সপ্তাহ পরে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর বিরতি যত বেশি হবে, রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়াতে তত সাহায্য করবে। এদিকে, কোভিশিল্ডের এই ভারতীয় সংস্করণের ক্ষেত্রে এমন কোনও ঘটনার কথা এখনও শোনা যায়নি। কোভ্যাক্সিনের কোনও রকম মারাত্বক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা এখনও জানা যায়নি।