নিজস্ব সংবাদদাতা- গালওয়ানে সেদিন ভারতের দাবি যে সঠিক ছিল তা এতদিনে বিশ্ববাসীর কাছে প্রমাণ হয়ে গেল। গালওয়ান সংঘর্ষের ফলে কুড়ি জন ভারতীয় সেনা যেমন প্রাণ হারিয়েছিলেন তেমনি চীনেরও বেশ কিছু সেনা জওয়ান মারা গিয়েছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল। যদিও এই দাবী সেই সময়ে চীন মানতে চায়নি। কিন্তু চীনা প্রশাসন গালওয়ানের ওই সংঘর্ষের ঘটনায় মৃত্যু হওয়া নিজের দেশের সৈন্যদের মরণোত্তর সম্মান প্রদান করে, যা প্রমাণ করে দেয় সেই সময় ভারতের দাবি একদম সঠিক ছিল।
গতবছর লাদাখের গালওয়ান অঞ্চলে ভারতীয় সীমানায় পাহারারত বাহিনীর সঙ্গে ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির সদস্যরা। তারা জোর করে ভারতীয় সীমানায় ঢোকার চেষ্টা করলে স্বাভাবিকভাবেই ভারতীয় সেনা বাধা দেয়। সেই সময় তারা ফিরে গেলেও কিছুক্ষণ পরেই লোহার রড, কাঠ সহ নানান অস্ত্র নিয়ে ফিরে আসে চীনের একটি বড় বাহিনী। তারা তুলনায় অল্প সংখ্যক ভারতীয় জওয়ানদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভারত-চীন যুদ্ধের পর সীমান্ত চুক্তি অনুযায়ী উভয়পক্ষের সেনাবাহিনী সীমান্তে টহলরত অবস্থায় আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে না। তার ফলে সংখ্যা কম হওয়ায় ভারতীয় সেনারা চীনের আক্রমনকারী বাহিনীকে প্রতিরোধ করতে পারেনি। কুড়ি জন ভারতীয় সেনা ওই ঘটনায় মারা যায়।
সেই সময় সেনাবাহিনীর পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল কুড়িজন ভারতীয় সেনা মারা গেলেও পাল্টা চল্লিশজন পিপলস লিবারেশন আর্মির সদস্য মারা গিয়েছে। ভারত প্রকাশ্যে নিজের সেনা সদস্যদের মারা যাওয়ার ঘটনা স্বীকার করে নিলেও চীন অদ্ভুতভাবে নিশ্চুপ ছিল। না সে দেশের কোনো সংবাদপত্রে, না সরকারি বিবৃতি কোথাও সেনা মৃত্যুর ঘটনা স্বীকার করা হয়নি।
আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন তৈরি হয়েছিল তবে কি ভারতীয় সেনারা একতরফাভাবে মার খেয়ে গিয়েছে, তারা পাল্টা মার দিতে পারেনি? কিন্তু আজ চিনা সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্তারা গালওয়ান কান্ডের ঘটনায় মৃত প্রায় চল্লিশজন সেনার পরিবারের হাতে একটি অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে মরণোত্তর সম্মান তুলে দেয়। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসতেই ভারতবাসীর পাশাপাশি গোটা বিশ্বের দরবারে পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে গালওয়ানে ঐ দিন ভারতীয় সেনা সদস্যরা একতরফা মার খায়নি, তারা পাল্টা মার দিয়েছিল চীনা সেনাদের। স্বাভাবিকভাবেই চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সরকার এই ঘটনায় বেশ কিছুটা অস্বস্তিতে পড়ে গিয়েছে।