কুষ্ঠ রোগাক্রান্ত স্বামী আর ৪ নাবালক সন্তানকে নিয়ে কোনওরকমে সংসার চালাতেন। আধভাঙা পাঁচিলের সঙ্গে এক টুকরো ত্রিপল টাঙিয়ে দিনমজুরি করে দিন কাটাতেন মা। কিন্তু সেই অস্থায়ী সংসারও ভেঙে পড়েছে সম্প্রতি। পুরুলিয়ার হুড়া থানার বিশপুরিয়া গ্রামের বাজারপাড়া এলাকায় সেই চার ভাইবোনের সামনে এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ।

শিশু
Facebook

সূত্রের খবর, চার মাস আগেই মারা যান তাদের বাবা মটক সিং সর্দার (৩৬)। এর দিন দশেক আগে মৃত্যু হয় তাদের মা লক্ষ্মীরও (২৮)। বাবা মাকে হারিয়ে এখন তিন ভাইবোনকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়ে ৬ বছর বয়সি অনিতা। তার পরের বোন সবিতার বয়স ৪ বছর। ছোট বোন কবিতা ৩ বছরের। সব থেকে ছোট ভাই বুদ্ধেশ্বরের বয়স মাত্র দেড় বছর। আপাতত ওই ত্রিপলের নীচেই দিন গুজরান করছে চার শিশু

16 17 52 images
Anandabazar patrika

এই অঞ্চলের তৃণমূলের যুব সভাপতি বিকাশরঞ্জন কালিন্দীর অভিযোগের তির বিজেপির দিকে। তিনি বলেছেন, ‘‘অনাথ শিশুগুলির দিকে বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত কোনও নজর দেয়নি। শিশুদের করুণ অবস্থার কথা স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরেও কোনও কাজ হয়নি।’’ এই ঘটনার প্রসঙ্গে রখেরা বিশপুরিয়া বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান প্রতিমা টুডু শুক্রবার বলেন, “আমি আজ কার্যালয়ে যাইনি।একটা মিটিংয়ে আছি।” তবে পরিবারটিকে সাহায্য করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

বুধবার রাতে এই শিশুদের করুণ অবস্থার ছবি-সহ কিছু লাইন সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন বিকাশরঞ্জন। এর পরেই কার্যত ভাইরাল হয় এই ঘটনা। বিকাশরঞ্জনের দাবি, অনেকেই এই শিশুদের সাহায্যের জন্য তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। বৃহস্পতিবার এই শিশুদের বাড়ি গিয়ে তাদের মায়ের পারলৌকিক কাজের জন্য আর্থিক সাহায্যও করেন পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো। তাঁরা ওই শিশুদের হাতে জামাকাপড়, শীতবস্ত্র, খাবার তুলে দেন। তৃণমূল সূত্রেই জানা গিয়েছে, ওই অভাগা শিশুদেরকে সরকারি হোমে পাঠানোর বন্দোবস্ত করা হচ্ছে।