গত শনিবার থেকে গোটা দেশজুড়ে শুরু হয়েছে টিকাকরণ। তবে ভ্যাকসিনেশন শুরু হলেও আতঙ্ক পুরোপুরি এখনও কাটেনি। তার জেরে প্রথম সারির করোনা ভাইরাস যোদ্ধাদের একাংশই টিকা নিতে আসছেন না বলে জানিয়েছে বিভিন্ন রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। সেই পরিস্থিতিতে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) এবং ভারত বায়োটেকের তরফে জানানো হয়েছে, কাদের কাদের কোভিশিল্ড এবং কোভ্যাক্সিন নেওয়া উচিত নয়।
কোভিশিল্ডে যে যে উপকরণ আছে, তা অ্যালার্জিবহনকারী ব্যাক্তিদের জন্য হানিকর তাই তাঁদের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং অ্যাস্ট্রোজেনেকার তৈরি করোনা টিকা না নেওয়ার পরামর্শই দিয়েছে সেরাম। একইসঙ্গে প্রথম ডোজ নেওয়ার পর যে টিকাগ্রাহকদের গুরুতর অ্যালার্জি সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, তাঁদেরও কোভিশিল্ড নিতে বারণ করা হয়েছে। সেরামের তরফে জানানো হয়েছে, কোভিশিল্ডে এল-হিস্টিডিন, এল-হিস্টিডিন হাইড্রোক্লোরাইড মনোহাইড্রেট, ম্যাগনেসিয়াম ক্লোরাইড হেক্সাহাইড্রেট, পলিসরবেট ৮০, ইথানল, সুক্রোজ, সোডিয়াম, ক্লোরাইড, ডি-সোডিয়াম ইডিটেট ডিহাইড্রেট, ইনজেকশনের জন্য জল থাকে।
করোনা টিকা প্রস্তুতকারী সংস্থার তরফে গতকালই জানানো হয়েছে, কোভিশিল্ড নেওয়ার আগে স্বাস্থ্যকর্মীদের জানাতে হবে যে কোনও ওষুধ, খাবার, কোনও টিকা বা কোভিশিল্ডের কোন উপকরণের ফলে অতীতে কোনও গুরুতর অ্যালার্জি সংক্রান্ত প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছিল কিনা। শারীরিক পরিস্থিতির বিষয়ে খুঁটিনাটি জানিয়ে দিতে বলা হয়েছে। টিকাগ্রাহক যদি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণের থেকে দুর্বল বা যাঁরা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব বিস্তারকারী ওষুধ খান এবং জ্বর থাকে বা রক্ত জমাট বাঁধার ধরনে সমস্যা হয় বা রক্ত কম ঘন হয়, তা টিকা নেওয়ার আগেই জানাতে বলেছে সেরাম।
সেরামের পাশাপাশি ভারত বায়োটেকের তরফেও এই একই তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। যে সংস্থার কোভ্যাক্সিন নিয়ে এখনও বিতর্ক মিটছে না। কোভ্যাক্সিনেও কী কী উপকরণ আছে, সেটাও জানানো হয়েছে। ভারত বায়োটেকের তথ্য অনুযায়ী, কোভ্যাক্সিনে ৬৪ গ্রাম হোল-ভিরিয়ন মৃত সার্স-কোভ-২ অ্যান্টিজেন (স্ট্রেন : এনআইভি-২০২০-৭২০), অ্যালুমিনিয়াম হাইড্রোক্সাইড জেল (২৫০ মাইক্রোগ্রাম), টিআরআর ৭/৮ অ্যাগনিস্টের (১৫ মাইক্রোগ্রাম) মতো উপকরণ থাকে।
তবে কোভ্যাক্সিন দেওয়ার আগে গ্রাহকরা টিকা নেবেন কি নেবেন না, তা জানতে চাওয়া হচ্ছে। ভারত বায়োটেকের টিকাগ্রাহকদের অনুমতিপত্রেও স্বাক্ষর করতে হচ্ছে। যদি কারও অ্যালার্জি, জ্বর থাকে, রক্ত জমাট বাঁধার ধরনে কোনও সমস্যা হয় বা রক্ত কম ঘন হয়, তাহলে তাঁদের কোভ্যাক্সিন না নেওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। অন্ত্বঃসত্ত্বা মহিলা বা যাঁরা স্তন্যপান করাচ্ছেন, তাঁদেরও কোভ্যাক্সিন এড়িয়ে যাওয়ার কথাই বলেছে সংস্থাটি। সেইসঙ্গে যাঁদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সাধারণের থেকে দুর্বল বা যাঁরা শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপর প্রভাব বিস্তারকারী ওষুধ খাচ্ছেন এবং অপর কোনও টিকার ডোজ নেওয়ার মানুষদেরও কোভ্যাক্সিন না নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে ভারত বায়োটেক।