কুসংস্কারে বন্দি মানব জীবন। আমাদের জীবনে আমরা সকলেই কোন না কোন সময় কুসংস্কারে আবদ্ধ হয়েছি। রাস্তায় বিড়াল কেটে গেলে দাঁড়িয়ে পড়া বা কোথাও বেরোনোর আগে হাঁচি হলে দাঁড়িয়ে যাওয়া এসব যেন মজ্জাগত। বাঙালির তথা ভারতের ঘরে ঘরে যেন এই কুসংস্কারগুলি অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।

কুসংস্কার খুঁজতে গেলে বহু উদাহরণ পাওয়া যায়।

এরই মাঝে দেখে নিন 10 টি জনপ্রিয় কুসংস্কার যা প্রত্যেক ঘরে ঘরে মানা হয়—

১) রাস্তায় বিড়াল কেটে যাওয়া:

19P
সৌজন্যে: Bangladesh Pratidin

বাঙালি তথা ভারতীয় মানুষদের মধ্যে একটি জনপ্রিয় কুসংস্কার হলো রাস্তায় বিড়াল কেটে গেলে দাঁড়িয়ে পড়া। বিড়ালকে অশুভ এর প্রতীক মনে করে এমন কাজটি করা হয়ে থাকে। কিন্তু এর ফল মাঝে মাঝে মারাত্মক হয়, অনেক সময় অনেক রকম দুর্ঘটনা ঘটে যায়।

২) ডাইনি প্রথা:

magic 1 2 650 031615091208
সৌজন্যে: India Today

বাঙালির ঘরে ঘরে বিশেষ করে গ্রামের দিকে আজও বিদ্যমান ডাইনি প্রথা। কোনো মহিলা হয়তো সে মানসিক ভারসাম্যহীন কিংবা একা থাকে তার ওপর গ্রামের লোকের বিরুপ জন্মানোয় তাকে ডাইনি আখ্যা দেওয়া হয়। এরপর নয়তো তাকে গ্রাম থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় বা তাঁকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়।

৩) বেরোনোর আগে হাঁচি:

sneeze
সৌজন্যে: DusBus

বাংলার ঘরে ঘরে এই কুসংস্কার প্রচলিত। কোন শুভ কাজের বেরোনোর আগে যদি হাঁচি পড়ে তাহলে কিছুক্ষণ সেই জায়গায় অপেক্ষা করতে হয়। কারণ মানা হয় যে বেরোনোর আগে হাঁচি পড়া মানে সেই কাজে বাধার সৃষ্টি হওয়া।

৪) রজ:স্বলা মহিলাদের মন্দিরে ঢুকতে বাধা:

durga puja 1
সৌজন্যে: Asianet News Bangla

রজ:স্বলা মহিলাদের মন্দিরে ঢুকতে বাধা বাংলা তথা সারা ভারতে একটি বহু প্রচলিত কুসংস্কার। শুধু মন্দির নয় তাদের বিভিন্ন ধর্মীয় কাজ, আচার-অনুষ্ঠান, পুজো থেকেও সরিয়ে রাখা হয়। মানা হয় এই সময় মহিলারা অশুদ্ধ থাকেন।

৫) সূর্যাস্তের পর নখ না কাটা:

nail cutting.jpg
সৌজন্যে: Argan Oil

এই প্রচলিত কুসংস্কারটির সে রকম কোনো যুক্তি নেই। তবুও এখনোও আমাদের মা-বাবারা সূর্যাস্তের পর নখ কাটতে মানা করেন। মনে করা হয় আগেকার দিনে অন্ধকারে নখের বদলে হাত কেটে যাওয়ার ভয়ে এই কাজটি করতে মানা করা হতো।

৬) ডান হাতের তালু চুলকালে টাকা আসবে:

image 211025.palms vs money
সৌজন্যে: kalerkantho.com

এই কথাটি আমরা প্রায়শই শুনে থাকি। কেউ কেউ তো আবার বিশ্বাসও করে। কিন্তু এই কুসংস্কারটির কোন যুক্তি নেই। কখনোই এরূপ জিনিস সম্ভবপর নয়।

৭) সন্ধ্যের পর ঘর ঝাড়ু না দেওয়া:

vastu tips 1583025671
সৌজন্যে: India Tv

ঘর যতই নোংরা থাকুক আপনার মা সন্ধ্যেবেলা কখনোই আপনাকে ঘর ঝাড়ু দিতে দেবে না। কারণ এটি কুসংস্কার হিসাবে প্রচলিত আছে। মানা হয় সন্ধ্যেবেলা যদি ঘর ঝাড়ু দেয়া হয় তাহলে ঘরের গৃহলক্ষী বাড়ি ত্যাগ করে চলে যায়।

৮) চোখ নাচা:

baton rouge bigthumb
সৌজন্যে: Ekush Shotok

বাঙালির ঘরে এটি একটি প্রবল প্রচলিত কুসংস্কার।মানা হয় মহিলাদের যদি বাম দিকের চোখ নাচে তাহলে কোনো সুসংবাদ আছে এবং ছেলেদের দিকে ঠিক উল্টো অর্থাৎ ছেলেদের যদি ডান চোখ নাচে তাহলে কোনো সুসংবাদ আছে।

৯) বাড়ির সামনে লেবু ও লঙ্কা ঝোলানো:

image
সৌজন্যে: anandabazar.com

এই কুসংস্কার মানে না এমন বাঙালি প্রায় দেখা যায় না বললেই চলে। বাড়ির দরজার সামনে কিংবা গাড়ির সামনে লেবু ও লঙ্কা ঝোলানো বাঙালির অভ্যাস। বাঙালিরা মানে যে লেবু লঙ্কা ঝোলালে মানুষের কু-দৃষ্টি থেকে বাড়ি ও গাড়ি রক্ষা পাবে।

১০) বাচ্চাদের কালো টিকা দেওয়া:

61vaSD08ydL. SL1500
সৌজন্যে: amazon.in

ভারতীয় বাচ্চাদের সঙ্গে এটা করা হয় জন্মের পর থেকেই। এই কুসংস্কার ভারতীয়দের মজ্জায় মজ্জায় ঢুকে আছে। বাচ্চাদের জন্মের পরেই মানুষের কুদৃষ্টি থেকে আগলানো জন্য তাদের কালো টিপ বা টিকা পরানো হয়।

ভারতীয় বা বাঙালিদের কুসংস্কারের কথা বললে শেষ হবেনা এত সংখ্যক-ই আছে। পরবর্তীকালে না হয় আরও উদাহরণ দেওয়া যাবে। ‌কিন্তু উপরিউক্ত গুলি প্রায় প্রত্যেক ঘরে ঘরেই প্রচলিত। কি আপনার ঘরে এমন কুসংস্কার কি প্রচলিত নেই? অবশ্যই আছে। আপনাদের বাড়িতে আরোও কি কি ধরনের কুসংস্কার মানা হয় নিচে কমেন্টে বলুন দেখি!