কিডনি মানবদেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রক্ত থেকে অতিরিক্ত তরল ও বর্জ্যকে বের করে দেওয়াই হল কিডনির কাজ। কিডনির এই পরিস্রুত করার ক্ষমতা চলে গেলেই শরীরে প্রচুর তরল ও বর্জ্য জমা হয়ে যায়, যার ফলে কিডনি বিকল হয়ে যায়। এই কিডনি রোগের হার দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঠিক সময় এর চিকিৎসা করা না হলে এর পরিণতি মারাত্বক হতে পারে। কিন্তু আপনি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন কিনা তা বুঝবেন কি করে?? আপনার জন্য রইল কিডনির রোগের লক্ষণ চেনার কয়েকটি উপায়-
প্রস্রাবে পরিবর্তন
কিডনির সমস্যায় প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়াটা প্রধান লক্ষণ। প্রস্রাব বেশী হওয়া বা কম হওয়া আপনাকে ইঙ্গিত দেয় আপানর রেচন তন্ত্র সঠিক ভাবে কাজ করছে কিনা। কিডনির সমস্যায় আপনার প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়ে যাবে। এছাড়া অনেক সময় আপনার প্রসাবের বেগ অনুভূত হলে ও প্রস্রাব হবে না সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরী।
প্রস্রাবে সমস্যা-
প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া বা ব্যাথা অনুভব কিংবা প্রস্রাবের সাথে রক্ত বের হওয়া কিডনির সমস্যার একটি বড় লক্ষণ। সাধারণত কিডনি সঠিক ভাবে কাজ না করলে এই ধরণের সমস্যা গুলি হয়ে থাকে।
শরীরে ফোলা ভাব
আপনার দেহের কোন জায়গায় অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে গিয়েছে? তাহলে দেরি না করে ডাক্তারকে দেখান কিডনি আমাদের শরীর থেকে বর্জ পদার্থ ও অতিরিক্ত জল বের করে দেয় তাই কিডনির সমস্যায় ওই বাড়তি জল আমাদের শরীরে জমে ফোলা ভাব তৈরি করতে পারে।
পিঠের পেশীতে ব্যাথা
কিডনির সমস্যার একটি অন্যতম লক্ষণ হল বারবার পিঠের পেশীতে টান বা খিঁচুনি অনুভব করা।
ত্বকের সমস্যা
হঠাৎ মুখে কালো দাগ ছোপ দেখা দিয়েছে? তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে ত্বকে বর্জ পদার্থ জমতে থাকে যার ফলে ত্বকে দাগ, চুলকানির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বমি বমি ভাব
কিডনির সমস্যা হয়ে থাকলে মাঝে মাঝেই বমি বমি ভাব অনুভূত হবে। বার বার বমির সমস্যা হওয়া টা কিডনির সমস্যার লক্ষণ হতে পারে।
শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা
কিডনির রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। যার ফলে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।
ঘুমের ব্যাঘাত ঘটা
কিডনি সঠিক ভাবে কাজ না করলে রক্ত ভালো ভাবে পরিশ্রুত হয়, না যার ফলে ঘুমে ক্ষেত্রে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
এছাড়া উচ্চ রক্তচাপ, অল্পতেই কান্ত হয়ে পড়া, এই ধরণের সমস্যা গুলি থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
কিডনির সমস্যা সমাধানের উপায়-
১) হাই ব্লাড প্রেসারে আক্রান্ত রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
২)ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রোগীদের কিডনির কার্যকারিতা প্রতি ৬ মাস অন্তর পরীক্ষা করতে হবে।
৩) শিশুদের গলা ব্যথা, জ্বর ও ত্বকে খোস-পাঁচড়ার সমস্যা থাকলে দ্রুত তার সঠিক চিকিৎসা করা উচিত। কারণ এগুলো থেকে কিডনি প্রদাহ বা নেফ্রাইটিস রোগ দেখা দিতে পারে।
৪) কিডনির সমস্যা রুখতে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়মিত রক্তের শর্করা এবং প্রস্রাবের অ্যালবুমিন পরীক্ষা করা ও রক্তের হিমোগ্লোবিন এওয়ানসি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
৫) চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ও তীব্র ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করবেন না।
৬) প্রস্রাবের ঘন ঘন ইনফেকশন হলে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা করান। পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন।