কলার পুষ্টিগুণের কথা তো আপনারা সকলেই জানেন। অনেকেই প্রতিদিন একটা বা দুটো করে কলা খান। খেতেও বড় ভালো কলা । কিন্তু কলা খেয়ে নেওয়ার পর তার খোসাটা কী করেন? ফেলে দেন নিশ্চয়ই । স্বাভাবিক খোসাটা নিয়ে গিয়ে নিশ্চয়ই ডাস্টবিনে ফেলে দেন।কিন্তু কলার খোসার গুনাগুন জানলে আর ফেলবেন না এটুকু বলতে পারি। এককথায় জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ, সবেতেই কলার খোসার ব্যবহার করা যায়।তাই এখন থেকে আর কলার খোসা না ফেলে বরং সেটা সযত্নে তুলে রাখুন। কিন্তু কেনো ? এই প্রশ্নটাই মনে জাগছে তো? তাহলে আসুন আজ এই বিষয় নিয়েই একটু আলোচনা হোক।
১)ফার্স্ট এইডের কাজে কলার খোসা :
কলার খোসায় থাকে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান। যা যেকোনও র্যাশ, মাইগ্রেনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।একটা কলার খোসা এক ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিন। তারপর বের করে কপাল এবং ঘাড়ে রাখুন। যতক্ষণ না ঠাণ্ডা ভাব যাচ্ছে রেখে দিন।
২)রুপোর জিনিস চকচকে করতে কলার খোসা :
অনেকদিন ধরে রুপোর জিনিস পরে থাকলে বা ফেলে রাখতে রাখতে কালো হয়ে যায়। ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলে। তখন আর সেই জিনিসটা পরতে ভালো লাগে না। তবে রুপোর জিনিসকে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারে কলার খোসা। কলার খোসার একটা পেস্ট বানান। তারপর আধা কাপ জল মিশিয়ে পেস্টটা পাতলা করে নিন। কয়েক মিনিট এই পেস্টটা দিয়ে রুপোর জিনিস ভালো করে ঘষলেই চকচকে হয়ে যায় !
৩) গার্ডেনিং করার কাজে কলার খোসা :
খুব ভালো সার হিসেবে কাজ করে কলার খোসা। কলার খোসা ছোট ছোট টুকরো করে কেটে নিন। সেগুলো মাটির নিচে পুঁতে দিন। খোসা থেকে মিথেন গ্যাস তৈরি হয়, যা গাছের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।গাছের আশপাশে কলার খোসা লাগিয়ে রাখুন। খোসা থেকে মাটি তৈরি হবে, যে মাটিতে থাকবে পরিপোষক পদার্থ। সেজন্য কলার খোসা সারারাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। প্রতিদিন গাছে জল দেওয়ার সময় সাধারণ জলের সঙ্গে কলার খোসা ভেজানো জল দিন।
৪)ছারপোকা দূর করতে কলার খোসা :
অনেক বাড়িতেই ভীষণ ছারপোকার উপদ্রব থাকে। একটা ঢাকনাযুক্ত প্লাস্টিকের বাকেট নিন। কলার খোসার মধ্যে কয়েকটা ছিদ্র করে দিন। তারপর রেখে দিন বাকেটের মধ্যে। খোসার মিষ্টি গন্ধে ছারপোকা আসবে।ছারপোকার কামড়ে ফুলে যায়, র্যাশ বের হয় স্কিনে। কলার খোসা নিয়ে যেখানে ছারপোকা কামড়েছে, সেই জায়গায় ঘষুন। এতে চুলকানি বন্ধ হবে।
৫)কলার খোসা খেতেও পারেন:
কলার খোসা সিদ্ধ করে নিন জলে। ১০ মিনিটের মতো সিদ্ধ করে জুসারে দিন। কলার খোসার জুস বানিয়ে খেলে দারুণ উপকার হবে। এর সঙ্গে স্ট্রবেরি বা কলাও মেশাতে পারেন। কলার খোসায় থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো।চায়ে কলার খোসা দিয়ে ফুটিয়ে নিতে পারেন।কলার খোসার দারুণ চাটনি হয়। একটু রেসিপি ঘাঁটলেই পেয়ে যাবেন।
৬) আঁচিল কমাতে :
যাঁদের ঘন ঘন আঁচিল হয়, তাঁরাও কিন্তু কলার খোসা থেকে বেশ উপকার পাবেন। আপনাকে যেটা করতে হবে সেটা হল আঁচিলের উপর কলার খোসার সাদা অংশটা ঘষুন। তারপর একটুকরো খোসা আঁচিলের উপর চাপা দিয়ে গজ ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়ে দিন। কিছুদিন করলেই চিরতরে বিদায় নেবে আঁচিল।