দেশ জুড়ে এবছর করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১০ লক্ষ্য মানুষ।মারা গিয়েছেন দেড় লক্ষ্যের বেশি।করোনার আতঙ্কে থমকে গিয়েছে ২০২০ সাল। ঘর থেকে বেরনো নেই, ঘরে বসেই কাজ। পড়াশুনো, শিক্ষকতা, মিটিং প্রভৃতি ঘর থেকেই সামলেছে গোটা বিশ্ব। এ এক অভিনব আতঙ্কের পরিস্থিতি, যা মানুষকে আবার অন্যের ছোঁওয়া বাঁচিয়ে চলার যুগে ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কেড়ে নিয়েছে আরও অনেক স্বাচ্ছন্দ্য। পরিবারের একজনের করোনা হলে রেহাই নেই বাকিদেরও। যতদিন না রিপোর্ট নেগেটিভ আসে আইসোলেশনে গৃহবন্দী দিন কাটাতে হবে পরিবারের সকলকে নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে নিজেকে বাঁচানোর কি কোন উপায় নেই?
ভারতবর্ষ ভেষজ আয়ুর্বেদের দেশ। প্রাকৃতিক উপায়ে সবকিছুর নির্মূল সম্ভব তা এই দেশই জানিয়েছে গোটা পৃথিবীকে। টিকার অপেক্ষায় না থেকে আজই নিজেকে সুরক্ষিত করুন ঘরোয়া উপায়ে।
জেনে নিন সাতটি ঘরোয়া টোটকা, যা অব্যর্থ ওষধির মতো কাজ করে আপনাকে করোনার হাত থেকে সুরক্ষিত রাখে।
১। কোভিডের সংক্রমন রুখতে শারীরিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা আগেই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। ভারতবর্ষের আয়ুষ মন্ত্রক এবার তার কিছু ঘরোয়া উপায়ও বাতলেছেন। রান্নায় বেশি করে ব্যবহার করুন হলুদ, জিরে ও ধনের মতো মশলা। সপ্তাহে অন্তত একদিন রান্নায় দিন জৈত্রি, জায়েরফল। এছাড়াও প্রতিদিন খাবারের সঙ্গে দুবেলা খান কাঁচা পেঁয়াজ।জীবাণুনাশক এবং উপশমদায়ক গুণাগুণ এগুলিতে থাকায় আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধের প্রয়োজনীয় উপাদানগুলির সরবরাহ সম্ভব হবে।
২। দিনে অন্তত তিরিশ মিনিট শরীর চর্চা করুন। প্রাণায়াম ও যোগব্যায়ামের ওপর বেশি জোর দিন। শরীরচর্চার ফলে আপনার সারা শরীরে অক্সিজেন মিশ্রিত রক্ত সঞ্চালন হয়, কোন কোষ দুর্বল হয়ে পড়েনা। এর ফলে হঠাৎ কোন রোগ এসে বাসা বাঁধতে পারবেনা আপনার দেহে। নিয়মিত প্রাণায়াম করলে আপনার শ্বাসযন্ত্র থাকবে সুরক্ষিত। ফুসফুস এবং কন্ঠনালিতেই করোনার জীবাণু প্রবেশ করে। প্রাণায়ামের মাধ্যমে সেই সংক্রমণ এড়ানো যেতে পারে।
৩। করোনার জীবাণু যদি কন্ঠে প্রবেশ করে সেই মুহূর্তে অঙ্কুরে বিনাশের উপায়ও জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞেরা। সারাদিনে বারবার পান করুন গরম জল। প্রয়োজনে তাতে একটু আদা ফেলে স্বাদ এনে নিন আর সারাদিন ধরে অল্প অল্প করে পান করুন। করোনা ভাইরাস গরম জলে যব্দ। যদি সংক্রমণ হয়ে থাকে তবে এই পদ্ধতিতে আপনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। আর যদি আগে থেকে পালন করেন তবে করোনা প্রতিষেধক হিসেবেও এই উপায় কার্যকরী হবে।
৪। সর্দিকাশির হাত থেকে দূরে থাকতে শরীরের যত্ন নিন। নিয়মিত স্নান করুন ঈষদুষ্ণ জলে। শীত পড়ে গেলে যারা নিয়মিত স্নান করেন না তাঁরা কিন্তু করোনার আক্রমণের ক্ষেত্র প্রশস্ত করছেন। এই ভুল একেবারেই করবেন না। নিয়মিত স্নান না করলে শরীরে উত্তাপের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে জ্বর সর্দিকাশির উপসর্গ দেখা যায়। এতে শরীর কাবু হয়ে পড়লেই আক্রমণ করতে পারে করোনা ভাইরাস। তাই সতর্ক থাকুন।প্রতিদিন টক জাতীয় ফল যেমন- পেয়ারা, আঙ্গুর, কমলালেবু, মুসাম্বি খান অথবা ভিটামিন সি ট্যাবলেট খান দুপুরে খাবার পড়ে। এতে সর্দিকাশির সমস্যা থেকে দূরে থাকবেন।
৫। দিনে এক থেকে দুবার খান ভেষজ চা।ফুটন্ত জলে তুলসি, দারুচিনি, গোলমরিচ, আদা, মধু একসাথে মিশিয়ে কিছুক্ষন রেখে ছেঁকে নিন। এভাবেই তৈরি করবেন ভেষজ চা যা আপনার শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারি এক রোগ প্রতিষেধক। খুসখুসে কাশি হলে দিনে একবার গরমজলের মধ্যে পুদিনা পাতা, ইউক্যালিপ্টাস তেল বা জোয়ান ফেলে ভাপ নেবেন। সেই জলে গারগেলও করতে পারেন। দমকা কাশি আসলে মধুর সঙ্গে লবঙ্গ গুঁড়ো মিশিয়ে মুখে রাখুন। সঙ্গে সঙ্গে উপকার পাবেন।
৬। প্রতিদিন সবুজ শাকসবজি খাদ্যতালিকায় রাখুন। বাজার থেকে সবজি এনে জলে ভিজিয়ে রাখবেন ঘণ্টা খানেক।তারপর রোদে শুকিয়ে নিন। এতে সবজিগুলি সম্পূর্ণরূপে জীবাণুমুক্ত হলে তবেই ফ্রিজে ঢোকান বা রান্না করুন।সপ্তাহে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যেগুলো অবশ্যই খাবেন- কুমড়ো, বিন্স, কড়াইশুঁটি, কলমি শাক, ক্যাপ্সিকাম, বরবটি, পটল, নটেশাক, কপি, উচ্ছে এবং ব্রকলি। এই সমস্ত সব্জি তেলে ভাজবেন না । সেদ্ধ করে বা ভাপিয়ে তরকারি করুন বা সেদ্ধই খান। এতে খাদ্যগুণ বজায় থাকবে। এছাড়া রসুন, আদা প্রতিদিনের রান্নায় ব্যবহার করুন অথবা কাঁচা খান ছোলার সঙ্গে মিশিয়ে।
৭। সকালে ঘুম থেকে উঠে আমলকীর রস খেতে পারেন। একান্তই মুখে না রুচলে হালকা গরমজলে লেবুর রস ও মধু মিশিয়ে পান করুন। এটি প্রাকৃতিক রোগ প্রতিষেধক হিসেবে সুপ্রাচীন কাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে ঘরে ঘরে।এছাড়াও দুধ খেতে যদি ভালোবাসেন, সেটিকেও পরিণত করতে পারেন করোনা প্রতিষেধকে। এক গ্লাস দুধের মধ্যে মিধিয়ে নিন আধ চামচ হলুদ গুঁড়ো, মধু এবং গোলমরিচ।উপরে ছড়িয়ে দিতে পারেন সামান্য ঘি।এটি অত্যন্ত পুষ্টিকর এক ওষধি পানীয়, যা আপনার মস্তিস্ক থেকে শুরু করে সারা শরীরের যত্ন নিতে সক্ষম।
তাহলে আবার ভয় কে করুন টাটা বাই বাই। কারণ আপনি যত ভয় পাবেন, ভয় আপনাকে আরও বেশী জাঁকিয়ে বসবে। কিন্তু এখন আর চিন্তা রইল না, কারণ ঘরোয়া পদ্ধতিতে এই সাত টোটকা এখন আপনার নখদর্পণে। তাই এই পদ্ধতিগুলো প্রয়োগ করুন এবং সুস্থ থাকুন। আর হ্যাঁ শুধু নিজে জানলেই হবে না, আপনার আশে পাশে মানুষ কিংবা প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করে নিন। কারণ এই ভয়াবহ পরিস্থিতেও পাশে থাকা একান্ত জরুরী। আর উপায় গুলি প্রয়োগে আপনি করটা লাভবান হলেন জানাতে কিন্তু একদম ভুলবেন না।
[…] করোনা সংক্রমণ এড়াতে কি কি ঘরোয়া উপায় আ… […]
[…] […]
[…] […]
[…] […]
[…] […]