নিজস্ব সংবাদদাতা: ইতিমধ্যেই গোটা দেশজুড়ে করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় পর্যায়ের টিকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। যে মারণ ভাইরাসের সংক্রমণের জেরে মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছিল, তা ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়েছে। সংক্রমণ পুরোপুরি না কমলেও করোনা ভ্যাকসিনের আবিষ্কার মানুষের মন থেকে দূর করেছে অতিমারীর আতঙ্ক। মৃত্যুর ভ্রুকুটির মাঝেও যে বেঁচে থাকার আকাঙ্খা জেগে থাকে মনে, এদিন তারই এক দৃষ্টান্তের সাক্ষী থাকল কলকাতা।
সারা দেশের মতো কলকাতাতেও টিকাকরণের দ্বিতীয় পর্যায়ে টিকা নিচ্ছেন ষাটোর্ধ্ব প্রবীণ নাগরিকরা। এদিন সেই পর্বে শহরেই করোনার টিকা নিলেন ১০১ বছরের এক বৃদ্ধ। জানা গেছে, কলকাতার সিএমআরআই হাসপাতালে টিকা নিয়েছেন ওই বৃদ্ধ, যিনি টিকাকরণের ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত শহর কলকাতার মধ্যে প্রবীণতম। নিজের জীবনের ১০০টিরও বেশি বসন্ত পার করেও যে বেঁচে থাকার সাধ থাকে ষোলো আনা, মৃত্যু চিন্তা তাঁকে কখনোই কাবু করতে পারে না।
সিএমআরআই হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ১০১ বছরের ওই প্রবীণ নাগরিকের শরীরে করোনার কোনোরকম উপসর্গ উপস্থিত ছিল না। ভ্যাকসিন গ্রহণের পরেই কোনো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি তাঁর। টিকা নিয়ে একপ্রকার উচ্ছ্বসিত প্রবীণ তারাচন্দ্র মাহেশ্বরী। তিনি জানিয়েছেন, “এই ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ছিলাম। সাধারণ টিটেনাসের মতোই মনে হল।” সেই সঙ্গে এখনও যাঁরা করোনা টিকা নেননি, তাঁদের উদ্দেশ্যে তারাচন্দ্রের উপদেশ, “গুজবে কান দেবেন না। আমাদের সকলেরই ভ্যাকসিন নেওয়া উচিত। তাহলেই আমরা করোনাকে জয় করতে পারবো।”
বস্তুত, করোনা ভাইরাস যে ৬০ বছরের ঊর্ধ্বের ব্যক্তিদের জন্যই সবচেয়ে বেশি ঘাতক হতে পারে, তা প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছেন বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকরা। বেশ কিছুদিন করোনার প্রকোপ কম থাকলেও সম্প্রতি দেশের নানা প্রান্তে ফের দেখা যাচ্ছে সংক্রমণের ঢেউ। মাথাব্যথা আরও বাড়িয়েছে করোনার নতুন স্ট্রেন। বিশেষত পশ্চিমের রাজ্য গুলিতে ফের উদ্বেগের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে এই করোনার জন্য। এমতাবস্থায় ভ্যাকসিন নেওয়াই সঙ্কট থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় বলে মনে করছে বৈজ্ঞানিক মহল।