নিজস্ব সংবাদদাতা- রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাকে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজ্য মন্ত্রিসভার এই বর্ষীয়ান সদস্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি করোনায় আক্রান্ত হন। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজেটিভ আসার পর থেকে তিনি হোম আইসোলেশনে ছিলেন। যদিও আজ সকাল থেকে তার তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এরপর আর কোনো ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শে শোভনদেব বাবুর পরিবারের লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
১৬ ফেব্রুয়ারি সরস্বতী পুজো উপলক্ষে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তৃণমূল ভবনে পুজো করেন। স্বাভাবিকভাবেই সেদিন তিনি প্রচুর মানুষের সংস্পর্শে আসেন। এর পরের দিন স্লিপ ডিস্কের চিকিৎসার জন্য এসএসকেএম হাসপাতালে যান ইনজেকশন নিতে। নির্দিষ্ট সময় অন্তর কোমরে এই ইনজেকশন নিতে হয় এই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদকে। ওই দিন রাত থেকেই তার শরীরে করোনার বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। ১৮ তারিখ চিকিৎসকের পরামর্শ মতো তিনি করোনা পরীক্ষা করেন। ১৯ তারিখ সকালে রিপোর্ট আসলে দেখা যায় তিনি করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত হলেও শরীরে এই মারণ রোগের উপসর্গ খুব কম থাকায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে হোম আইসোলেশনে রাখার নির্দেশ দেন চিকিৎসকরা। প্রাথমিকভাবে হোম আইসোলেশনে তিনি ভালো থাকলেও গতকাল, অর্থাৎ ২২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকেই নতুন করে তার জ্বর আসে। সেই সঙ্গে শরীর প্রচন্ড দুর্বল হয়ে পড়ে। আজ সকাল থেকে তীব্র শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বিদ্যুৎ মন্ত্রীর। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চিকিৎসকরা বাড়িতে রাখার ঝুঁকি না নিয়ে তাকে তৎক্ষণাৎ হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেয়।
দক্ষিণ কলকাতার যে বেসরকারি হাসপাতালে তিনি ভর্তি আছেন সেই হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় আপাতত স্থিতিশীল আছেন। তার শারীরিক পরিস্থিতি এই মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণে, তবে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখছেন ডাক্তাররা। বিদ্যুৎ মন্ত্রীর চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে বলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সার্বিক পরিস্থিতি সম্বন্ধে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়েছেন।
চিকিৎসক মহলের বক্তব্য বরাবরের কর্মঠ শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরিস্থিতি খুব একটা আতঙ্কজনক না হলেও তার বয়সের বিষয়টি মাথায় রাখতে হচ্ছে। এটিই চিকিৎসকদের একমাত্র দুশ্চিন্তার কারণ।