বাংলা তথা হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের বিখ্যাত অভিনেতা বিশ্বজিৎ দেব চট্টোপাধ্যায়। ১৯৩৬ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর তিনি কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। যদিও তিনি নিজেই এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার জন্ম ১৯৩৯। যদিও অনেক সাইটে ’৩৬ সাল দেখায়, সেটা ভুল।’
তবে ঠিক কোনটা ধরব যদি ‘৩৬ এ হয় তবে তিনি ৮৪, আর ‘৩৯ এ হলে আশি পার করে একাশিতে। যাইহোক আশির দরজা অতিক্রম করেছেন এই চির যুবক অভিনেতাটি। তাঁকে বৃদ্ধ ভাবতে মন চায়না কখনোই।
প্রসেনজিতের বাবা বিশ্বজিৎ না বিশ্বজিতের ছেলে প্রসেনজিৎ… কী জানি কে কার পরিচয়। বলতে পারি, দুজনেই দু’জনের পরিচয়।
বছর দুই আগে তাঁর বৌমা অর্পিতা লেখেন, ‘‘তুমি আমার চোখে কখনওই বৃদ্ধ হবে না ৷ তোমার মতো এক ব্যক্তি আমার জীবনে থাকায় আমি নিজেকে ভাগ্যবতী মনে করি ৷ আমার জীবনে তোমার উপস্থিতি সম্পর্কের থেকেও অনেক ঊর্ধ্বে ৷ শুভ জন্মদিন বাপি।”
অভিনেতা বিশ্বজিৎ:-
বাড়ি থেকেও অভিনেতার জীবন মেনে নিতে চাননি। গড়পার রোডে তাঁর মামাবাড়ি থেকে তাঁকে তাড়িয়ে দেয়। তাঁর বাবাও পাশে ছিলেন না, তিনি অভিনয়কে পেশা হিসেবে মেনে নেননি। বাবা আমার পেশা মেনে নেননি। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে দিন কাটিয়েছেন। রংমহলে তিরিশ টাকা মাইনের একটা কাজ পান। এভাবেই স্ট্রাগল করেই কিন্তু ভিত পাকা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমাকে হিরো বানিয়েছিলেন বিমল ঘোষ, বরাহনগরের এম পি স্টুডিয়োর কর্ণধার।’
তাঁর প্রথম ছবি ‘ডাকহরকরা’ ১৯৫৮-য় আমার প্রথম ছবি মুক্তি পায়। জুনিয়র আর্টিস্ট হিসেবে কাজ শুরু।
বলিউডে ৫০ বছর কাটিয়ে নস্ট্যালজিক বিশ্বজিৎ কলকাতায় আনন্দ প্লাসের সাক্ষাৎকারে বলেন,
‘বলিউডে প্রথম সারির পাঁচ নায়কের মধ্যে আমার নাম আসত।’
১৯৬২ সালে তিনি হিন্দি চলচ্চিত্র ‘বিশ সাল বাদ’-এ অভিনয় করেন।
পরিচালক বিশ্বজিৎ:-
১৯৭৫ সালে ‘কেহেতে হে মুজকো রাজা’ ছবিটি প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন। এই ছবিতে অভিনয় করেন ধর্মেন্দ্র, হেমা মালিনী, শত্রুঘ্ন সিনহা এবং রেখা।
গায়ক বিশ্বজিৎ:-
অভিনয়ের পাশাপাশি গান তাঁর প্রাণ। শুধু নায়ক নন, অত্যন্ত সুগায়ক ছিলেন বিশ্বজিৎ। নচিকেতা ঘোষ, সলিল চৌধুরী, শ্যামল মিত্র, অমল মুখোপাধ্যায়ের সুরে বহু কালজয়ী গান গেয়েছেন। পৃথিবীর নানা দেশে তিনি পারফর্ম করেছেন। লণ্ডনে লতাজির সঙ্গে, বার্মিংহামে আশাজির সঙ্গে… মান্না দে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় নাইটেও অনেক গান গেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘তবে আমার কোনও প্রথাগত ট্রেনিং ছিল না। হেমন্তদার ছোট ভাই সঙ্গীত পরিচালক অমল মুখোপাধ্যায় আমাকে দিয়ে প্রথম গান রেকর্ড করায়। প্রথম গান ‘কখন নদীর তীরে সন্ধ্যা নামবে’। সেটা হিট হওয়ার পরে প্রতি পুজোয় গান বেরোত।’
এবারের জন্মদিন খুব ভালো কাটুক আপনার।