উত্তরপ্রদেশের হাথরসের অমানবিক গণধর্ষণের ঘটনা আরো একবার সমস্ত দেশবাসীর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মেয়েরা এখনো সমাজে কতটা অসহায় এবং নির্ভয়া ঘটনার পর সমাজ যে কোনো শিক্ষা নেয়নি তা আরো একবার পরিষ্কার হয়ে গেল|একই সাথে আরো একবার প্রশ্নের সম্মুখীন হল যোগী রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা|অবশেষে দু সপ্তাহ ব্যাপী অমানুষিক লড়াইয়ের পর জীবনযুদ্ধে পরাজিত হলেন উত্তরপ্রদেশের হাথরসের গণধর্ষণের শিকার সেই ১৯ বছরের তরুণী|গত 29 সেপ্টেম্বর দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন তিনি|
গত 14 ই সেপ্টেম্বর হাথরসে নিজের মা ও ভাইয়ের সাথে ওই তরুণী মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন|ঘাস কেটে ফেরার সময় তিনি মা ও ভাইয়ের থেকে রাস্তায় পিছিয়ে পড়েন|সেই সময় অতর্কিতে পিছন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে অভিযুক্ত চার যুবক এবং তাকে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে অমানবিক অত্যাচার চালায়|ধর্ষণের পর মেয়েটিকে খুন করার পরিকল্পনা করে তারা|প্রবল শারীরিক অত্যাচারের ফলে ওই তরুণীর শিরদাঁড়া এবং কাঁধের বেশকিছু হাড় ভেঙে যায় এবং জিভ কেটে যায়|পরে তার মা খোঁজাখুঁজি করে মেয়ের রক্তাক্ত দেহ পান পাশের বাজরা ক্ষেতের মধ্যে|পরিবারের অভিযোগ পুলিশ অভিযোগ নিতে চাননি দলিত পরিবার বলে|কিন্তু ঘটনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং জাতীয় স্তরে ছড়িয়ে পড়ায় হইচই শুরু হয় এবং নড়েচড়ে বসে যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন|গ্রেপ্তার করা হয় গ্রামেরই চার যুবককে যাদের দিকে অভিযোগের আঙুল ছিল|জীবনযুদ্ধের কঠিন সংগ্রামের মাঝেও মেয়েটি অভিযুক্ত যুবকদের শনাক্ত করে|
অবশেষে দুই সপ্তাহ লড়াইয়ের পর হার মানলেন ওই নির্যাতিতা তরুণী|নির্যাতিতার মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই চন্দ্রশেখর আজাদ এর ভীম আর্মি ওই হাসপাতালের সামনে বিক্ষোভ দেখায়|দোষীদের ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো হয়|অবরোধ করা হয় এমস হাসপাতালের সামনের রাস্তা|
পরিশেষে আমাদের একটাই প্রশ্ন থাকবে মহিলাদের উপর এই অমানবিক পাশবিক এবং অকথ্য অত্যাচার এর শেষ কবে? সমাজে আর কত নির্ভয়ার জন্ম দেবে এই মেরুদণ্ডহীন শাসন ব্যবস্থা?
ঋদ্ধি দাশ