“ইন্টারভিউ” হল জীবনে কাজের জগতে প্রবেশ করবার প্রথম ধাপ। কাজের জগতে এগিয়ে আজ যারা বহুদুর পৌছে গেছেন তারাও কোন এক সময়ে এই ধাপ অতিক্রম করেই পৌছেছেন। সঠিকভাবে ইন্টারভিউ দেওয়ার বেশ কিছু নিয়ম কানুন রয়েছে। ঠিকভাবে নিয়ম কানুন না মেনে ইন্টারভিউ দিলে সিলেক্ট হওয়ার কনোরকম সম্ভাবনা থাকে না। আপনি যদি এই বিষয়ে অবগত না থাকেন এবং সামনে আপনার কোন বড় ইন্টারভিউ থাকে তবে আর দেরি না করে চটজলদি জেনে নিন ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কোন 5টি জিনিস কখনোই করবেন না।
১. উল্টোপাল্টা ড্রেস পরে ইন্টারভিউ দিতে যাবেন নাঃ
সবসময় মনে রাখবেন ইন্টারভিউ দিতে যাবার সময় উল্টোপাল্টা ড্রেস পরবেন না। ইন্টারভিউ দিতে গেলে সবসময় ফর্মাল ড্রেস পরা উচিত। মেয়েরা চাইলে ইন্ডিয়ান ফর্মাল বা ওয়েস্টার্ন ফর্মাল পরতে পারেন। ইন্ডিয়ান ফর্মাল এর মধ্যে মেয়েরা সালোয়ার কামিজ, কুর্তি লেগিন্স প্রভৃতি পরতে পারেন এবং ওয়েস্টার্ন ফর্মালের মধ্যে ফর্মাল শার্ট ও ফর্মাল প্যান্ট পরতে পারে। ছেলেদের জন্য শুধুমাত্র ফর্মাল শার্ট ও ফর্মাল প্যান্ট পরার নিয়ম রয়েছে। ফর্মাল ড্রেস ছাড়া ইন্টারভিউ দিতে যাবার মানে হল নিজের পায়ে নিজেই কড়ুল মারা। যে কোন ইন্টারভিউ দিতে যাবার সময় খুবই স্বল্প পরিমানে তৈরি হয়ে যাওয়া উচিত। এতে আপনার ইন্টারভিউয়ারের আপনার সম্বন্ধে ভাল ধারনা তৈরি হবে ও আপনার সিলেক্ট হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে বই কমবে না।
২. ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে বেশি কথা বলবেন নাঃ
কখনোই ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে বেশি কথা বলা উচিত নয়। ইন্টারভিউয়ার আপনাকে যত টুকু প্রশ্ন করবেন ঠিক ততটুকুই আপনি উত্তর দেবেন। প্রশ্নের থেকে বেশি উত্তর দিলে অনেক সময় ইন্টারভিউয়ার আপনাকে যোগ্য ক্যান্ডিডেট বলে মনে করবেন না। বেশি কথা বলতে গিয়ে অনেক সময় আপনি ভুলও কিছু বলে দিতে পারেন যার ফলে চাকরিটি আপনার হাতছড়া হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রবল হয়ে দাঁড়ায় এবং আপনি যে বাচাল সেই বিষয়টিও আপনার যোগ্যতার উপর প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। সব সময় মনে রাখবেন ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কাজটির প্রতি আপনি আপনার যোগ্যতা প্রমাণ দিতে গেছেন। সেখানে গিয়ে আপনি এমন কোন কাজ করবেন না যাতে আপনার যোগ্যতা নষ্ট হয়।
৩. ওভার স্মার্টনেস দেখাতে যাবেন নাঃ
প্রত্যেকটি ক্যান্ডিডেটের মধ্যে স্মার্টনেস থাকাটা আবশ্যক। কিন্তু ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে ওভার স্মার্টনেস আপনার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আমরা ওভার স্মার্টনেসের চক্করে পড়ে ভুলভাল কাজ করে ফেলে যর ফলে পরে আমাদের আফসোস হয়। এবার আপনার মনে এই প্রশ্ন জাগতে পারে যে কোন ব্যবহারটি আপনার ওভার স্মার্টনেসের মধ্যে পড়ছে। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে যখন ইন্টারভিউয়ার আপনাকে কাজ সম্বন্ধিত কোন প্রশ্ন করলেন এবং আপনি সেই প্রশ্নের যথাযথ উত্তর নাই জানতে পারেন। সেখানে আপনি ক্ষমা চেয়ে নিয়ে বলতেই পারেন যে উত্তরটি আপনার জানা নেই। কিন্তু যদি আপনি ওভার স্মার্টনেসে পড়ে ভুল উত্তর দিয়ে দেন তাহলে এটি আপনার জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হবে। কথায় আছে ভুল জানার থেকে কিছু না জানা ভালো। ঠিক এই কারণেই ওভার স্মার্টনেস কখনোই দেখানো উচিত নয়।
৪. বাড়ি থেকে দেরি করে বেরোবেন নাঃ
সব সময় মনে রাখবেন ঠিক সময়ে ঠিক জায়গায় না পৌঁছলে সুযোগ হাতছাড়া হতে বেশিক্ষণ সময় লাগে না। ঠিক এই কারণেই কখনোই ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় বাড়ি থেকে দেরি করে না বেরিয়ে বরং চেষ্টা করবেন অনেকটা সময় হাতে নিয়ে বেরোবার। সঠিক সময়ের আগে পৌঁছানো একটি ভালো দিক হিসেবে দেখা হয়। এর থেকে বোঝা যায় যে আপনি আপনার কাজ নিয়ে কতটা সিরিয়াস। তাই কখনো ইন্টারভিউ দিতে যাবার সময়ে বাড়ি থেকে বের হবেন না।
৫. ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে আগে থেকে ফলাফলের চিন্তা করবেন নাঃ
ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে কখনই আগে থেকে ফলাফলের চিন্তা করবেন না। ফলাফলের চিন্তা করলে আপনি আপনার ইন্টারভিউয়ে মনোযোগ দিতে পারবেন না। সব সময় মনে রাখবেন আপনি আপনার ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে নিজের যোগ্যতা বিচার করছেন। ঠিক এই কারণেই নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য আগে আপনাকে আপনার কাজ এবং আপনার জ্ঞান সম্বন্ধে সঠিক ধারণা রাখতে হবে। ইন্টারভিউ দেয়ার আগে থেকেই যদি আপনি ফলাফলের চিন্তা করেন তবে আপনি কখনোই ঠিকভাবে ইন্টারভিউ দিতে পারবেন না। কারণ আপনার মন সব সময় ফলাফলের উপর থাকবে। ওই সময়টাকে এইভাবে বরবাদ না করে নিজের কাজে লাগাবেন। ইন্টারভিউয়ের আগে ফলাফলের চিন্তা না করে কিভাবে কেমন ভাবে ইন্টারভিউ এর প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেবেন সেই চিন্তা করবেন দরকার পরলে একবার মনে মনে প্রশ্নগুলির উত্তর ঝালিয়ে নেবেন।
উপরের লেখাটি পড়ে বুঝতে পারলেন নিশ্চয়ই যে কোন কোন কাজ গুলি ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার সময় না করাই আপনার জন্য উপযুক্ত। উপরের উল্লেখিত কাজগুলি কখনোই ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে করবেন না এতে আপনার নিজেরই ক্ষতি হবে। কমেন্ট বক্সে অবশ্যই জানান কোন কোন বিষয়ে আপনি আগে কোন ইন্টারভিউ করেছেন কিনা।