নিজস্ব সংবাদদাতা: খেলতে খেলতে বা খেতে খেতে অসাবধানতাবশত হামেশাই কিছু মুখে দিয়ে ফেলে বাচ্চারা। কখনো কখনো গলায় আটকে গিয়ে সাংঘাতিক পরিণতিও হতে দেখা যায়। কিন্তু তাই বলে সেফটিপিন? তাও আবার বাচ্চা নয়, একেবারে বছর ষাটেকের বৃদ্ধা! শুনতে আশ্চর্য লাগলেও সম্প্রতি এমনটাই ঘটেছে আসানসোলে।

মুড়ি খেতে গিয়ে বেখেয়ালে একটা আস্ত সেফটিপিন গিলে ফেলেছিলেন ৬০ বছরের জনৈক বৃদ্ধা। তাও আবার বন্ধ নয়, খোলা অবস্থাতেই ছিল সেই সেফটিপিন। তবে আশার কথা হল বৃদ্ধার বিপদ এখন কেটে গেছে। সংকটের দীর্ঘ প্রহর পেরিয়ে এখন সুস্থতার পথে আসানসোলের তারা রাউত।

সেফটিপিন

বৃদ্ধার সুস্থতার সমস্ত কৃতিত্ব আসানসোল জেলা হাসপাতালের ইএনটি বিভাগের। অত্যন্ত ঝুঁকির সঙ্গে অস্ত্রোপচারে সফল হল হয়েছে তাঁরা। জানা গেছে তারা রাউত নামের ওই বৃদ্ধা আসানসোলের জামুড়িয়ার বাসিন্দা। আসানসোল জেলা হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন বীরেশ্বর মণ্ডলই ঐ বৃদ্ধার গলায় আটকে থাকা খোলা সেফটিপিনটি বার করেছেন। রবিবার অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বৃদ্ধার গলা থেকে সেফটিপিনটি বার করা হয় বলে জানা গেছে হাসপাতাল সূত্রের খবরে।

বস্তুত, অসাবধানতায় গিলে ফেলা খোলা সেফটিপিনটি তিন দিন ধরে আটকে ছিল ঐ বৃদ্ধার গলায়। তিন দিন ধরে ঐ অবস্থাতেই ছিলেন ঐ বৃদ্ধা। যে ধরণের অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বৃদ্ধার প্রাণ বাঁচানো হল ডাক্তারি ভাষায় এই ধরণের অস্ত্রোপচারকে ‘ইসোফেগোসকপি’ বলা হয়। বৃদ্ধার এই ঝুঁকিপূর্ণ অস্ত্রোপচারে ইএনটি সার্জেন বীরেশ্বর মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন আসানসোল জেলা হাসপাতালের অ্যানাসথেসিস্ট ডক্টর জাহাঙ্গির মল্লিক । বলা বাহুল্য, ডাক্তারদের জন্যই আরো একবার জীবন ফিরে পেলেন জামুড়িয়ার বৃদ্ধা।

10 31 53 images

বস্তুত, জেলা হাসপাতালে ইসোফেগোসকপি সাধারণত করা হয় না। কিন্তু এই বৃদ্ধার ক্ষেত্রে প্রচলিত ব্যবস্থার ব্যতিক্রম ঘটেছে। বলাই যায়, এই ধরণের অস্ত্রোপচার করে নজির গড়ল আসানসোলের জেলা হাসপাতাল। বড় বড় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বা বড় বড় বেসরকারি হাসপাতালে এই ধরণের অস্ত্রোপচার করা হয়। সেই দিক দিয়ে দেখতে গেলে আসানসোলের জেলা হাসপাতালের ইএনটি সার্জেন বীরেশ্বর মণ্ডল ইসোফেগোসকপির মতো অস্ত্রোপচার করে নজির গড়েছেন। হাসপাতাল সূত্রের খবর, এই অস্ত্রোপচারের পর এখন বৃদ্ধা অনেকটাই ভালো আছেন। কয়েকদিন পর্যবেক্ষণে রেখে তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হবে।