নিজস্ব সংবাদদাতা: দেশের নানা প্রান্তে ক্রমশ কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে শুরু করেছে। প্রতি দিনই বাড়ছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। একইসঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। এর মধ্যে বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ল্যানসেটের এক রিপোর্ট জানাল, আগামী জুনের প্রথম সপ্তাহে দেশে দৈনিক মৃত্যু বেড়ে ২ হাজার ৩২০ পর্যন্ত হতে পারে। প্রথম পর্বে দেশে এক দিনে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছিল ১ হাজার ২৯০ জনের। সেটা ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০ সাল। তার পর ধীরে ধীরে মৃত্যু কমতে থাকে।
কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া এই তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১৮৫ কোভি আক্রান্তের। ল্যানসেটের রিপোর্ট বলছে, যে দিকে পরিস্থিতি যাচ্ছে তাতে মাস দেড়েকের মধ্যে দৈনিক মৃত্যু হাজারেরও বেশি বাড়বে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, “কোভিডের প্রথম সংক্রমণের মতোই দ্বিতীয় তরঙ্গ থাবা বসাচ্ছে ভারতের দ্বিস্তরীয় এবং ত্রিস্তরীয় শহরগুলিতে। ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে দৈনিক নতুন সংক্রমণ ১০ হাজার থেকে বেড়ে ৮০ হাজার হয়েছে মাত্র ৪০ দিনে। গত সেপ্টেম্বরে যা হতে সময় লেগেছিল ৮৩ দিন।”
সেই রিপোর্ট বলছে, দ্বিতীয় তরঙ্গ প্রথমটির থেকে দু’টি ক্ষেত্রে ভিন্ন। প্রথমত, দ্বিতীয় তরঙ্গে নতুন সংক্রমণ প্রথম বারের থেকে দ্রুত হারে ছড়াচ্ছে। দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয় তরঙ্গে উপসর্গহীন এবং মৃদু উপসর্গের রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। যার ফলে বর্তমান সময় পর্যন্ত আক্রান্তদের হাসপাতালে ভর্তি করার হার এবং মৃত্যু হার তুলনামূলক ভাবে কম। কিন্তু যে হারে দেশে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে, তা সকলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকারি নথি বলছে, দেশের দৈনিক সংক্রমণ বৃহস্পতিবার প্রথম ২ লক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ২ লক্ষ ১৭ হাজার ৩৫৩ জন। সমগ্র করোনা পর্বে যা এখনও অবধি সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় ঢেউয়ের জেরে দৈনিক মৃত্যুও পর পর ৩ দিন হাজার ছাড়িয়েছে।
এই পরিস্থিতি থেকে কী ভাবে বেরনো যায়, তারও নিদান দেওয়া হয়েছে ল্যানসেটের ওই রিপোর্টে। যার প্রথমেই রয়েছে তরুণ প্রজন্মকেও টিকাকরণের আওতায় আনা। শুধু ৪৫ বছরের ঊর্ধ্বে নয়, তার থেকে কম বয়সীদেরও টিকাকরণের আওতায় নিয়ে আসার কথা বলা হয়েছে ল্যানসেটের রিপোর্টে। এর জন্য টিকা উৎপাদন বাড়ানো, মানুষকে আরও বেশি টিকা নিতে উদ্বুদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে করোনা ভাইরাসের বদলে যাওয়া চরিত্র বুঝতে জিনের গঠনতন্ত্র বোঝা বা ‘জিনম সিকুয়েন্সিং’-এর উপর জোর দিতে বলা হয়েছে।