এই অতিমারির প্রকোপের জন্য শেষ সাত থেকে আট মাস স্কুল কলেজ সব বন্ধ। অনলাইন ক্লাস-ই একমাত্র ভরসা। কিন্তু এই অনলাইন ক্লাসে ধারণাটি বেশিরভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের কাছেই একেবারে নতুন। তাই ক্লাসে মনোযোগ এর ঘাটতি খুব স্বাভাবিক। কিন্তু সামনে মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক।এমনকি কলেজের সেমিস্টার সবই চলবে নিজের নিয়মে। তাই অনলাইন ক্লাস পড়াশোনার প্রতি বাড়াতে হবে মনঃসংযোগ। দেখে নেওয়া যাক কিভাবে অনলাইন ক্লাসে বাড়ানো যাবে মনঃসংযোগ-
নির্দিষ্ট রুটিন তৈরীঃ
এখন বাড়িতে বসেই ক্লাস করার সুযোগ রয়েছে, তাই বলে ক্লাসের দু মিনিট আগে ঘুম থেকে উঠে রাতের পোশাকে ক্লাস করার মোহ ছাড়তে হবে।রাতে ঘুমোতে যাওয়া এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার নির্দিষ্ট রুটিন তৈরি করতে হবে। ক্লাস এর আগে যথেষ্ট সময় হাতে নিয়ে স্নান করে, পোশাক পাল্টে ব্রেকফাস্ট করে ক্লাস অ্যাটেন্ড করতে হবে। রুটিনে যেন কোন রকম ছেদ না পরে।
ক্লাস করার নির্দিষ্ট জায়গাঃ
ঘরের যেকোনো জায়গায় যেকোন ভাবে যখন ইচ্ছা অনলাইন ক্লাস এটেন্ড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। পড়াশোনার জন্য নির্দিষ্ট জায়গায় বা নির্দিষ্ট টেবিলে বসে ক্লাস করতে হবে। সেই জায়গা যেন সুন্দর ভাবে গোছানো থাকে এবং হাতের কাছে যেন প্রয়োজনীয় বইপত্র মজুত থাকে।
মনঃসংযোগ বিচ্যুতির উপকরণ এড়িয়ে চলাঃ
বাড়িতে ক্লাস হওয়ার কারণে মনঃসংযোগ বিচ্যুতির নানা উপকরণ আমরা এড়িয়ে যেতে পারি না। সুযোগ পেলেই হাতের কাছে মোবাইলটা নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে মন চায় কিংবা পাশের ঘরে বাড়ির সদস্যরা কি নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলছে সেখানে যোগ দিতে যাওয়ার ইচ্ছা হয়। মনোসংযোগে একাগ্রতা বজায় রাখার জন্য ভালো Noice Cancelation হেডফোন ব্যবহার করা যেতে পারে। যাতে বাইরের কোন আওয়াজ কানে না আসে। সম্ভব হলে অনলাইন ক্লাসগুলো ল্যাপটপে করাই বাঞ্ছনীয়। যাতে হাতে কাছে মোবাইলটা নিয়ে না পড়তে বসতে হয়।এছাড়া মনঃসংযোগ বৃদ্ধির জন্য সকাল সন্ধা আধঘণ্টা মেডিটেশন করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
পড়াশোনার চর্চায় থাকাঃ
শিক্ষক, সহপাঠীদের সাথে সহাবস্থান করে পড়াশোনার সুযোগ এখন নেই মানছি, কিন্তু ক্লাসের পরে যেকোনো সময় যেকোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে শিক্ষকদের সাথে যোগাযোগ করতে ভয় পাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই। এছাড়াও ক্লাসের পরে বন্ধুদের সাথে গ্রুপ চ্যাটে, কনফারেন্স কলে সেদিনের পড়ানো বিষয়টাকে নিয়ে চর্চা করা যেতেই পারে।
এ সবকিছুর বাইরেও দরকার নিজের সাথে সময় কাটানো। নিজেকে অবসর দেওয়া। এই কথাটা বুঝতেই হবে যে এই অতিমারি পরিস্থিতির কারণে স্কুল-কলেজ আবার খুলবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু সময় কারো জন্য থেমে থাকে না। তাই এই সময়টা নষ্ট করে নিজের জীবনের মূল্যবান অধ্যায় টাকে নষ্ট করার অত্যন্ত অন্যায়। মনঃসংযোগ করতে খুব বেশি অসুবিধা হলে শিক্ষকদের সাথে সরাসরি এই বিষয়ে কথা বলা যেতে পারে। অভিভাবকদের উচিত এ বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি দেওয়া, প্রয়োজনে কাউন্সেলিং এর সাহায্য নেওয়া। এই পরিস্থিতিতে একেবারে নতুন, এই অভিযোজন ও সময় সাপেক্ষ।