খোদ রাম জন্মভূমিতেই অকালবোধনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে অস্বস্তিতে যোগী সরকার।গেরুয়া শিবিরের এই মুহূর্তে পাখির চোখ ২০২১ সালের বাংলার বিধানসভা নির্বাচন ,সেই পরিস্থিতিতে বাঙালি সবচেয়ে বড় উৎসবে নিষেধাজ্ঞা জারি কে কেন্দ্র করে প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশের যোগী সরকার। দেশব্যাপী অতিমারি পরিস্থিতিকে মাথায় রেখেই এই বছর স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিমায় দুর্গাপুজো পালনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে উত্তরপ্রদেশের সরকার। গত সোমবার সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় এই বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশে কোন প্যান্ডেল তৈরি বা মেলার আয়োজন করা যাবে না।জনগণ নিজের ইচ্ছায় নিজের বাড়িতে পুজো করতে পারে। এই ঘোষণার পর থেকেই সূচনা হয় বিতর্কের। প্রত্যাশিতভাবেই দেশব্যাপী বিরোধী শিবির থেকে যোগী সরকারের উদ্দেশ্যে ধেয়ে আসে “বাঙালি-বিরোধী” তকমা,কিন্তু এই বিতর্ক নতুন মাত্রা ধারণ করে বঙ্গ বিজেপির সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত র মঙ্গলবার দুপুর ১১ টা ৫৬ মিনিটে করা একটি টুইটে। টুইটের মাধ্যমে স্বপন দাশগুপ্ত খোলাখুলিভাবে এই ঘোষণাকে “বৈষম্যমূলক” আখ্যা দেন।ওনার মতে কঠোর বাধানিষেধের আরোপের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশে রামলীলা পালনের অনুমতি দেওয়া সত্বেও দুর্গাপুজোর ওপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা অন্যায় এবং অবাস্তব। সর্বোপরি তিনি উত্তরপ্রদেশের বাঙালি হিন্দুদের পক্ষ থেকে,এই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানান।
টুইটারে স্বপন দাশগুপ্ত এই কৌশলী শব্দ চয়ন অত্যন্ত ইঙ্গিতবহ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ২০২১ এ গেরুয়া শিবিরের বাংলা বিজয়ের পরিকল্পনার প্রাকমুহুর্তে কোনরকম ভাবে ই বাঙালির আবেগে আঘাত হানতে চাইছেনা শীর্ষ নেতৃত্ব। তাই উত্তরপ্রদেশের দুর্গাপুজো ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা যে একান্তভাবেই উত্তরপ্রদেশের সরকারের সিদ্ধান্ত,বিজেপি শিবিরের সর্বসম্মত নির্দেশ নয় তারই প্রতিফলন স্বপন দাশগুপ্তের এই টুইট। যদিও বিজেপি মহলের একাংশের দাবি রামলীলা উত্তরপ্রদেশের ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান হওয়ার কারণেই এই অতিমারি পরিস্থিতিতেও ছাড় মিলেছে তাতে। যদিও এই যুক্তি খন্ডন করে বিরোধী শিবিরের দাবি এই করোনা পরিস্থিতিতে বাঙালির ভাবাবেগকে মাথায় রেখে উড়িষ্যা ও মধ্য প্রদেশের সরকার দুর্গাপূজা পালনের অনুমতি দিয়েছে কিন্তু যোগী সরকারের এই বিরোধিতা আদপে বিজেপির বাঙালি-বিরোধী সত্তার বহিঃপ্রকাশ। সুতরাং বিরোধী শিবিরের সাথে এবার বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তের টুইটের সংযোজন যোগী সরকারের নির্দেশকে এক চরম প্রশ্নচিহ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কিছুটা হলেও আশায় বুক বাঁধছে উত্তরপ্রদেশের বাঙালি হিন্দুদের একাংশ, পরবর্তী ঘোষণার অপেক্ষায়।