বাংলার বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক ঘটনাবলীতে ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে পরিস্থিতি। একদিকে রাজ্যে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির উত্থান, অন্যদিকে বাম-কংগ্রেস জোটের হুংকার বেশ চাপে রেখেছে শাসক শিবিরকে। এর মাঝে ভোটের মুখে দেখা দিয়েছে দলত্যাগের হিরিকও। দলীয় রাজনৈতিক নেতাদের অসন্তোষ, দলবদল ইত্যাদি সব মিলিয়ে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে।
প্রাক্তন পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দল ত্যাগের ক্ষত সারতে না সারতেই ফের সামনে এল আরেক পদত্যাগের ঘটনা। নতুন বছরের শুরুতেই রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে আচমকা ইস্তফা দিলেন দীর্ঘদিনের কর্মী। রাজ্যের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। ৫ জানুয়ারি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিজের পদত্যাগ পত্র পাঠিয়ে দিয়েছেন। লক্ষ্মীরতন শুক্লার ইস্তফা গ্রহণ করা হয়েছে বলেও জানা গেছে সূত্রের খবরে। মন্ত্রীত্বের পাশাপাশি লক্ষ্মীরতন শুক্লা হাওড়া তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতির পদ থেকেও ইস্তফা দিয়েছেন।
কিন্তু প্রাক্তন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্লার পরিচয়টা শুধুই রাজনৈতিক মহলে আবদ্ধ নয়। রাজনীতিতে যোগ দানের আগেও এক অন্য পরিচয়ে তিনি জনগণের কাছে বিশেষ জনপ্রিয় ছিলেন। তা হল তাঁর ক্রীড়া জগতের পরিচয়। একসময় ভারতের জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলেছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। ব্যাটে বলে দুরন্ত প্রদর্শনে তিনি একসময় মন জয় করেছিলেন দর্শকদের।
প্রাক্তন ক্রিকেটার লক্ষ্মীরতন শুক্লা ছিলেন ডান হাতি ব্যাটসম্যান এবং মিডিয়াম পেস বোলার। অলরাউন্ডার হিসেবেই ছিল তাঁর পরিচিতি। বাংলা ক্রিকেট দলের হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে অসাধারণ প্রদর্শনের জন্য ১৯৯৯ সালে জাতীয় দলে ডাক পান তিনি। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একদিনের ক্রিকেটে প্রথম জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক হয় লক্ষ্মীরতন শুক্লার। এমনকি এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ভারতের টেস্ট দলেও নাম ছিল তাঁর। কিন্তু দ্বাদশ ব্যক্তি হিসেবে নাম থাকায় পাঁচ দিনের ক্রিকেট খেলার সুযোগ পান নি তিনি।
জাতীয় দলে স্বপ্নের সুযোগ এলেও বেশি দিন তা কপালে সয় নি। ধারাবাহিকতার অভাবে খুব বেশি দিন জাতীয় দলে নিজের জায়গা ধরে রাখতে পারেন নি হাওড়া জেলার এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। এছাড়া সমকালীন সময়ে অন্যান্য প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের উত্থানও লক্ষ্মীরতন শুক্লার ক্রিকেটীয় কেরিয়ারের বিরুদ্ধে গিয়েছিল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। বাইশ গজের প্রতিযোগিতায় অবহেলিত হয়েছিলেন তিনি। নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করার জন্য তেমন সুযোগই পান নি এই অলরাউন্ডার।
তবে জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ না পেলেও আইপিএলে বেশ কিছুদিন খেলতে দেখা গিয়েছিল লক্ষ্মীরতন শুক্লা। কলকাতা নাইট রাইডার্স ছাড়াও দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এবং সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের হয়ে ২০১৫ সাল পর্যন্ত খেলা চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি।
২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। উত্তর হাওড়া কেন্দ্র থেকে নির্বাচনে দাঁড়িয়ে জয় লাভও করেন তিনি। এরপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অধীনে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান তিনি। বাইশ গজকে সরাসরি বিদায় না জানিয়ে এভাবেই খেলার সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করে রেখেছিলেন ছিলেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা।
কিন্তু ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে সেই মন্ত্রীত্ব পদ থেকে ইস্তফা দিলেন এই প্রাক্তন ক্রিকেটার। কেন হঠাৎ ইস্তফা দিলেন তিনি? সূত্রের খবর, প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও ঘনিষ্ঠমহলে দলের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন লক্ষ্মীরতন শুক্লা। তাঁর প্রতি অবহেলারই অভিযোগ এনেছেন তিনি। গত ৪ বছরে কোনো কাজেই বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে ডাকা হয় নি এই প্রাক্তন ক্রিকেটারকে।
তবে কি শুভেন্দু অধিকারীর পদাঙ্কই অনুসরণ করতে চলেছেন তিনিও? ঘাসফুল ছেড়ে নাম লেখাতে চলেছেন পদ্মফুলে? বলা বাহুল্য, উত্তর দেবে সময়।
[…] ১৮৫৬ সালের মে মাসে, আওয়াধ-এর দশম নবাব ওয়াজিদ আলী শাহ তাঁর ভগ্ন হৃদয় নিয়ে কলকাতায় এসেছিলেন। ব্রিটিশরা তার জমি, কোষাগার, তার স্বাচ্ছন্দ্য সম্পর্কিত যাবতীয় উপাদান বাজেয়াপ্ত করেছিল, এমনকি তিনি লখনউ থেকেও বিতাড়িত হন। কলকাতার উপকণ্ঠে মেটিয়াবুরুজে নবাব তাঁর প্রিয় রাজধানীর একটি প্রতিরূপ পুনর্নির্মাণ করেছিলেন। বিশালাকার ইসলামিক কাঠামো, তাঁর প্রিয় পরিখানা,চিড়িয়াখানা, ঘুড়ি ওড়ানো, কবুতরবাজি রাজকীয় খাবারের রান্নাঘর কি ছিলোনা সেখানে। কিন্তু নবাবের অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা অনেকাংশে কমে যাওয়ায় রাজকীয় খাবারের মান ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছিল।সুতরাং নবাবের রাধুনিরা মাংসের ঘাটতি মোকাবিলার জন্য একটি উদ্ভাবনী উপায় নিয়ে ভাবেন। তারা রাজকীয় উপকরণে আলু এবং ডিম যুক্ত করেন এবং এইভাবে কলকাতার বিরিয়ানি-র জন্ম হয়। […]