নিজস্ব সংবাদদাতা- নন্দীগ্রামে শহীদ দিবস পালন করা নিয়ে তাহলে কি এবার রেষারেষি শুরু হয়ে গেল? এই প্রশ্নটা উঠছে কারণ গতকাল রাতে ঠিক রাত বারোটা বাজার পর। নন্দীগ্রামের ভাঙাবেড়া গ্রামে উপস্থিত হন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি সেখানে শেখ সেলিম, ভরত মন্ডল সহ নন্দীগ্রাম আন্দোলনের তিন শহীদের স্মৃতিতে গড়ে তোলা শহীদ বেদীতে মালা দিয়ে শহীদ দিবস পালন করেন।

মালা দেওয়ার পরই শুভেন্দু পুরানো কথা স্মৃতিচারণ করেন, “২০০৭ সালের ৮ জানুয়ারি আমি নিজের হাতে শহীদ শেখ সেলিমের মৃতদেহ তুলেছিলাম। সেই যন্ত্রণার স্মৃতি মনে পড়লে আজও গায়ে কাঁটা দেয়।” রাজনৈতিক মহল মনে করছে দলবদলের পর শুভেন্দু নন্দীগ্রাম আন্দোলনকে তার ব্যক্তিগত কৃতিত্ব হিসাবে তুলে ধরার জন্য এতটা তৎপর হয়ে উঠেছেন। এর আগেও একাধিক সভা থেকে সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া এই নেতা তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলেছিলেন, “দরকারের সময় নন্দীগ্রাম বাসীর পাশে পান্তা ভাত খাওয়া এই গ্রামের ছেলেটাই ছিল। নেতারা সব কলকাতায় বসে আন্দোলনের ফসল ঘরে তুলেছে।”

নন্দীগ্রামে,
এই শহীদ বেদীতেই মধ্যরাতে মালা দেন শুভেন্দু অধিকারী

শুভেন্দু অবশ্য গত ২৭ নভেম্বর নন্দীগ্রামের সভা থেকে জনগণের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানিয়েছিলেন তাঁরা যেন ৮ জানুয়ারি মধ্যরাতে ভাঙাবেড়িয়ার শহীদ বেদীতে এসে শহীদ দিবস পালনের অনুষ্ঠানে শামিল হন। এই বিজেপি নেতা দাবি করেন তিনি শহীদ দিবসের মতো বেশ ক’টি দিন দল ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে পালন করেন। তিনি সবকিছুতে রাজনীতি খুঁজতে যান না বলেও দাবি করেন। এরপরই তৃণমূলের উদ্দেশ্যে হুঙ্কার ছেড়ে বলেন, “আপনাদের কলকাতার নেতারা বলেছিল নন্দীগ্রামে আমাকে ঢুকতে দেবেনা। পারলেন আটকাতে? শুভেন্দু অধিকারীকে নন্দীগ্রামে আসা থেকে কেউ কোনোদিন আটকাতে পারবেনা!”

বিরোধীরা অবশ্য মধ্যরাতে শুভেন্দুর এই শহীদ দিবস পালনের ঘটনাকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি। তাদের দাবি তৃণমূলের থেকে এগিয়ে থাকার উদ্দেশ্যেই মাঝরাতে শহীদ দিবস পালনের নাটক করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে তৃণমূলের পক্ষ থেকে এই বিষয়ে দলীয় ভাবে এখনো পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। তবে আজ শহীদ দিবস উপলক্ষে নন্দীগ্রামে জনসভা করতে যাবেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। এই বিষয়টি নিয়ে এর আগেই কটাক্ষ করেছিলেন শুভেন্দু। গতকাল উপস্থিত মানুষদের উদ্দেশ্যে বলেন, “কলকাতা থেকে নেতারা আসছে। কেন আসছে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন। ভোট এসে গিয়েছে, ভোট পাখিরা এই সময় চার পাশে এসে ভিড় করতে শুরু করবে। কিন্তু আমি আপনাদের ঘরের ছেলে, কখনো ভোট চাওয়ার জন্য আপনাদের কাছে এসে হাজির হই নি।”

আজ নেতাইয়ের‌ও শহীদ দিবস‌ সেখানে শুভেন্দু অধিকারীর সভা হওয়ার কথা। যদিও নেতাইয়ের বেশকিছু স্থানীয় তৃণমূল নেতা এর আগেই হুমকির সুরে জানিয়েছেন তারা শুভেন্দুকে সভাস্থলে প্রবেশ করতে দেবেন না!