নিজস্ব সংবাদদাতা- দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডে উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুরনগরে অমিত শাহর সভা বাতিল হয়ে যাওয়ায় হাতে নতুন ইস্যু পেয়ে গেল তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্যের শাসক দলের নেতারা বলতে শুরু করেছেন মতুয়াদের মুখোমুখি হওয়া থেকে নিস্তার পেতেই দিল্লি বিস্ফোরণকাণ্ডকে অজুহাত হিসাবে খাড়া করে আসেননি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তারা গোটা বিষয়টিকে মতুয়া সম্প্রদায়ের অপমান হিসাবে তুলে ধরেন।
প্রসঙ্গত গতকাল রাতে দিল্লিতে অবস্থিত ইজরায়েলের দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণ ঘটে। কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও গোটা বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই আন্তর্জাতিক রূপ পেয়েছে। তদন্তের জন্য জোর তৎপরতা শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে। এই বিষয়ে একের একের পর এক উচ্চপদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করেছেন অমিত শাহ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে গোটা বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব বর্তেছে তার ওপর।
ইজরায়েল দূতাবাসের সামনে বিস্ফোরণের ঘটনাটি আন্তর্জাতিক মাত্রা পেয়ে যাওয়ায় এই মুহূর্তে দিল্লি ছেড়ে আসা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষে বেশ সমস্যার।সেই কারণেই গতকাল রাতে দুদিনের পশ্চিমবঙ্গ সফর বাতিল করে দেন তিনি। প্রসঙ্গত শনিবার মতুয়া গড় বলে পরিচিত ঠাকুরনগরে গিয়ে মতুয়াদের ঠাকুর বাড়িতে যাওয়ার কথা ছিল অমিত শাহের। পাশাপাশি ঠাকুরনগরের জনসভা করার কথা ছিল তার। এই জনসভা থেকেই সিএএ-এনআরসি নিয়ে মতুয়াদের উদ্দেশ্যে তিনি সুনির্দিষ্ট বার্তা দিতেন বলে খবর।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর সফর শেষ মুহূর্তে বাতিল হয়ে যাওয়ায় আজ ঠাকুরনগর যান মুকুল রায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তারা সেখানে গিয়ে বনগাঁর বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুরের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠক চলাকালীন শান্তনুর সঙ্গে কথা বলেন অমিত শাহ। তিনি জানিয়েছেন খুব শীঘ্রই ঠাকুরনগরে জনসভা করবেন, হয়তো আগামী সপ্তাহেই নতুন সূচি ঘোষণা করে রাজ্য সফরে আসবেন।
রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এই প্রসঙ্গে বলেন, “আগে থেকেই জানতাম অমিত শাহ ঠাকুরনগরে আসবেন না। আসবেন কি করে? নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লোকসভা নির্বাচনের সময় ভোট আদায় করেছেন, অথচ কোনো কিছুই হয়নি। সিএএ করার ক্ষমতা ওনার নেই। জনসভার প্রতিশ্রুতি দিয়েও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী না এসে মতুয়াদের অপমান করেছেন। দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনা অজুহাত, উনি যে আসবেন না এটা এক সপ্তাহ আগে থেকেই জানতাম।”
প্রসঙ্গত আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ক্ষমতা দখলের ক্ষেত্রে মতুয়া ভোট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কমপক্ষে ত্রিশটি আসনের জয় পরাজয় মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর নির্ভর করে। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল ও বিজেপি দুপক্ষই মতুয়াদের মন পেতে উঠে পড়ে লেগেছে।