নিজস্ব সংবাদদাতা: একুশের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফার বাকি আর মাত্র পাঁচ দিন। এর মাঝেই গতকাল ইস্তেহার প্রকাশ করে বড়সড় চমক দিয়েছে বিজেপি। শিক্ষা, চাকরি থেকে শুরু করে পরিবহন, গেরুয়া ইস্তেহারের প্রায় গোটাটা জুড়েই রয়েছে মহিলাদের জন্য ঢালাও প্রতিশ্রুতি। আসন্ন নির্বাচনে মহিলা ভোট ব্যাঙ্কে এভাবে ফোকাস করে ইস্তেহার প্রকাশে কার্যত বদলে গেছে সমস্ত সমীকরণ। শেষ মুহূর্তের ভোট আবহে এই চমকে ভরা ইস্তেহার ঠিক কতটা প্রভাব ফেলবে? এখন লাখ টাকার প্রশ্ন সেটাই।
গতকাল ঘোষিত নির্বাচনী ইস্তেহারে অমিত শাহ জানিয়েছেন নীল বাড়ির ক্ষমতায় আসতে পারলে ব্যাপক সুযোগ সুবিধা পাবেন মহিলারা। রাজ্য সরকারের সমস্ত চাকরিতে মহিলাদের জন্য ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণ করা হবে, কন্যাশ্রী প্রকল্পের পাল্টা হিসেবে ১৮ বছর হলেই মেয়েদের দেওয়া হবে এককালীন ২ লক্ষ টাকা। কেজি থেকে শুরু করে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হবে। মহিলাদের পরিবহনও হবে বিনামূল্যে। রাজ্য জুড়ে ১ টাকাতেই মিলবে স্যানিটারি ন্যাপকিন। মহিলাদের জন্য থাকবে সরকারের পক্ষ থেকে এককালীন ২০ হাজার টাকা করে ঋণের ব্যবস্থা। এছাড়া, তফশিলি জাতি-উপজাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণী ও পরিবারে কন্যা সন্তান জন্মালেই মিলবে ৫০ হাজার টাকাও।
বিজেপির এই ইস্তেহারে মহিলা ভোটকে ফোকাসে রেখে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক যে কাজ করেছে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। কিন্তু অনেকেই মনে করছেন শহুরে আধুনিক প্রগতিশীল নারী সমাজে এই ইস্তেহারের বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশের মতে, এযাবৎ যারা নারী পুরুষের সমানাধিকারের কথা বলে আসছেন তাঁরা এই ইস্তেহার দেখে ভ্রু কুচকাতে পারেন। তাঁরা এই ইস্তেহারকে ঠিক কতটা স্বাগত জানাবেন? মহিলা সর্বস্ব ইস্তেহারকে কোন দৃষ্টিতে দেখবেন পুরুষেরা? উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
বস্তুত, স্যানিটারি ন্যাপকিন কিংবা প্রশাসনিক পদে মহিলাদের নিয়োগের মতো প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য হলেও, কন্যা সন্তানের জন্মে সরকারি সাহায্য কিংবা বিনামূল্যে পরিবহনের মতো প্রস্তাবগুলি কি সামাজিক লিঙ্গভেদের নামান্তর নয়? ইস্তেহার ব্যাক ফায়ার করবে না তো? উত্তর মিলবে ২ মে।