করোনা থেকে বাঁচতে বারবার যেমন মাস্ক আর স্যানিটাইজারের উপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা তেমনই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও নজর দিতে বলেছেন। সম্প্রতি, আবার দেশে করোনার নতুন স্ট্রেন এসেছে। করোনা ভাইরাসের এই নতুন ধরন নিয়ে ক্রমশ আতঙ্ক বাড়ছেই। সেই ভয় এবার ঢুকে পড়ল মহানগরীতেও। বর্ষবরণের আনন্দের রাত আসার আগেই ভয় ছড়িয়েছে করোনার নতুন স্ট্রেন নিয়ে। তাই এবার বাড়িতে থেকেই কীভাবে ইমিউনিটি বাড়ানো যায় সেই চেষ্টাই করছেন সকলে। আর তাই রাতারাতি বিক্রি বেড়েছে হলুদ, আদা, পাতিলেবু, আমলকীর। তবে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলুদের জুড়ি মেলা ভার। প্রাচীন আর্য়ুবেদ শাস্ত্রেও সেই উল্লেখ রয়েছে। এক টুকরো কাঁচা হলুদ কিংবা এক চামচ হলুদের গুণ অনেক।

করোনা

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে প্রাচীন কাল থেকেই যে সব খাবারকে রোগ প্রতিরোধক ও জীবাণুনাশক হিসেবে ধরা হত, হলুদ তাদের মধ্যে অন্যতম। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানও হলুদের গুণাগুণ বিচার করে তাঁকে মান্যতা দিয়েছে। হলুদকে তাঁরা সুপার ফুডের আখ্যা দিয়েছেন। এমনিতেও ভারতীয় যে কোনও রান্নাই হলুদ ছাড়া শোভা পায় না । হলুদের মধ্যে কারকিউমিন নামের ধাতব যৌগ থাকে ৩-৫ শতাংশ। যা মুখের স্বাদ ফেরাতে খুবই সাহায্য করে।

কাঁচা হলুদ

এছাড়াও হলুদ অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। আর তাই হলুদ মেশানো দুধই বেশি করে খাওয়ার কথা বলা হয়েছে। করোনার সময়ে নানা বিষয়েই মন থাকছে উদ্বিগ্ন। পিছু ছাড়ছেনা টেনশন। তাই এই সময়ে হলুদ আর অশ্বগন্ধা একসঙ্গে খেলে ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে জানানো হয়েছে আয়ুষ মন্ত্রকের তরফে।তাছাড়া, কাঁচা ও শুকনো হলুদের গুঁড়োতে আছে প্রচুর পরিমাণে কারকিউমিন যৌগ, যা আসলেও একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।

আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞরা কারকিউমিনকে ‘ম্যাজিক যৌগ’ বলেন। কারকিউমিন ছাড়াও হলুদে আছে ফোলেট যা ফলিক অ্যাসিডের মূল উপাদান (গর্ভাবস্থার শুরু থেকে নিয়মিত খাওয়া উচিত), নিয়াসিন, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, ভিটামিন কে, ভিটামিন ই, প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট।

health tips 1200x675 1

এখানেই শেষ নয়, কাঁচা হলুদে আছে ভিটামিন সি। সুতরাং রোজ নিয়ম করে কাঁচা হলুদ খাওয়া ও রান্নায় হলুদ ব্যবহার করলে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার হয়। সাধারণ জ্বর সর্দি হাঁচি কাশির পাশাপাশি কোভিডের মতো অসুখকে ঠেকাতে পারে। বিজ্ঞানীরা প্রমাণ পেয়েছেন হলুদের মধ্যে থাকা কারকুমিন বিভিন্ন অসুখবিসুখের বিরুদ্ধে লড়াই এর এক অন্যতম হাতিয়ার।

করোনা থেকে বাঁচতে,

বিজ্ঞা নীরা প্রায়ই কাঁচা হলুদ খাওয়ার কথা বলছেন।এবার জেনে নিই বাড়িতে কাঁচা হলুদ কি ভাবে খাওয়া যায় ।

১)কালো গোল মরিচের গুঁড়ার সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খেলে এর উপকারিতা অনেকাংশে বেড়ে যায়। তাই চেষ্টা করুন কাঁচা হলুদের সঙ্গে গোল মরিচ মিশিয়ে খেতে।

২)এক ইঞ্চি কাঁচা হলুদ এবং এক চা চামচ ঘি মিশিয়ে নিন। আপনার যদি অবিরাম শুকনো কাশি হয় তবে এটি প্রতিদিন খান।

৩)দুধের সঙ্গে হলুদ ফুটিয়েও পান করতে পারেন। এটি অত্যন্ত উপকারী। কারণ এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি আরও অনেক স্বাস্থ্য সুবিধা দেয়। বিশেষ করে শ্বাসনালীর সংক্রমণে আক্রান্তদের হলুদ দুধ খাওয়া উচিত, যাকে গোল্ডেন মিল্কও বলা হয়। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রেও হলুদ উপকারী হিসাবে পরিচিত।

৪) কাঁচা হলুদ ছোট টুকরো করে নিয়ে আখের গুরের সাথে খেতে পারেন।